Sydney Attack : তিন দিনে দু’বার, সিডনিতে ফের ছুরি হামলা, এবার চার্চে
এই সময় | ১৬ এপ্রিল ২০২৪
সিডনি: তিন দিনে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার। শনিবার দুপুরের পর সোমবার রাত। শপিং মলের পর এ বার গির্জা। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরে কি এখন ছুরি হামলার মরশুম? সোমবার রাতে সিডনি শহরের উপকণ্ঠে একটি চার্চে যখন প্রার্থনাসভা চলছে, সেই সময়ে সেখানে সবাইকে হকচকিয়ে দিয়ে ছুরি নিয়ে হামলা চালাল এক আততায়ী। প্রথমেই সে আক্রমণ করে বিশপকে, তাঁর বুকে আঘাত করে ছ’বার।গির্জায় তখন উপস্থিত আরও কয়েক জন জখম হন হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে। তাঁরা সবাই যোগ দিয়েছিলেন ওই প্রার্থনাসভায়। সিডনির সেন্ট্রাল বিজ়নেস ডিস্ট্রিক্ট থেকে ৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে, ওয়াকলিতে ওই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিশপ-সহ আহতদের সবার অবস্থা স্থিতিশীল।
গত শনিবার, ১৩ এপ্রিল দুপুরে সিডনির ওয়েস্টফিল্ড বন্ডাই জাংশন শপিং মলে এক আততায়ী এলোপাথাড়ি ছুরি চালিয়ে পাঁচ মহিলা-সহ ছ’জনকে খুন করে, তার পর প্রাণ হারায় এক মহিলা পুলিশ অফিসারের গুলিতে। তার রেশ কাটতে না-কাটতেই সোমবার রাতে গির্জার ওই ঘটনা। সেটা জানাজানি হওয়ার পর ক্ষুব্ধ, উত্তেজিত জনতা গির্জার সামনে জড়ো হয়ে দাবি করে যে, হামলাকারীকে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। তাদের কোনও রকমে সামাল দেয় পুলিশ। হামলাকারী ওই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। হামলার মোটিভ এখনও পরিষ্কার হয়নি তদন্তকারীদের কাছে।
সিডনির শপিং মলে হামলাকারীর টার্গেট মূলত মহিলারাই ছিলেন বলে পুলিশের তদন্তে এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে। ওই আততায়ীর নাম জোয়েল ক্যচি। তার বাবা অ্যান্ড্রু কোচি জানিয়েছেন, জোয়েল বেশ কিছু কাল যাবৎ মানসিক অবসাদে ভুগছিল এবং কোনও গার্লফ্রেন্ড না-হওয়ায় হতাশগ্রস্ত ছিল সে।
সোমবার রাতের ঘটনা যেখানে ঘটে, সেটি একটি অ্যাসিরিয়ান চার্চ। ‘ক্রাইস্ট দ্য গুড শেফার্ড চার্চ’ তার নাম। ঘটনার একটি ভিডিয়ো ক্লিপ সামনে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিশপ মার মারি ইম্যানুয়েল সেই সময়ে গির্জার উঁচু জায়গা, অল্টার বা বেদিতে দাঁড়িয়ে সমবেতদের উদ্দেশে কিছু বলছিলেন। সেই সময়েই কালো জাম্পার পরা এক জন সোজা হেঁটে গিয়ে বিশপকে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে।
কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই ব্যক্তি পর পর কোপ দেয় বিশপের বুকে। সম্বিৎ ফিরতে চিৎকার করে ওঠেন প্রার্থনাসভায় উপস্থিত অনেকে। তাঁরা তখন ভীতসন্ত্রস্ত। তার পর বিশপকে বাঁচাতে গিয়ে ওই আততায়ীর ছুরির আঘাতে জখম হন আরও অন্তত চার জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তি, যাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে পুলিশের বক্তব্য, আহতদের বাকিদের আঘাত তেমন গুরুতর নয়।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তে প্রায় এক ডজন অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছয় ওই চার্চের সামনে। জখম বিশপকে রক্তাক্ত অবস্থায় তোলা হয় একটি অ্যাম্বুল্যান্সে। ক্যানি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ওই বিশপ খুব জনপ্রিয়। এখানকার সবাই ওঁকে ভালোবাসেন। আমিও ওঁর খুব ভক্ত। তিনি ঈশ্বরের কথা সহজ, সুন্দর ভাষায় আমাদের মধ্যে প্রচার করেন। বিশপকে সবাই ভালোবাসেন বলেই ওঁর উপর হামলারয় লোকজন এত খেপে গিয়েছে।’
নিউ সাউথ ওয়েলস-এর স্টেট প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স সোশাল মিডিয়া পোস্ট-এ সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকতে এবং পুলিশ ও ইমার্জেন্সি সার্ভিসের কথা মতো চলতে আহ্বান জানিয়েছেন।