Calcutta High Court : অদক্ষ সরকারি কৌঁসুলি! সুবিচার হবে কী ভাবে?
এই সময় | ১৬ এপ্রিল ২০২৪
অমিত চক্রবর্তী
শূন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে কী করে কোনও আইনজীবী হাইকোর্টে ফৌজদারি মামলা লড়ার সরকারি প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হন--সোমবার সে প্রশ্ন তুলল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু প্রশ্নই নয়, অনভিজ্ঞ, অদক্ষ আইনজীবী নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে বিষয়টি রাজ্যের লিগাল রিমেমব্রান্সারের কাছে পাঠিয়েছে হাইকোর্ট।সরকারি গ্রুপ-সি প্যানেলে থাকা এক আইনজীবী এ দিন একটি জামিনের মামলায় বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানিতে যোগ দেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত অভিযুক্তকে জামিন দেয়। তার পরেই সরকারি প্যানেলের ওই আইনজীবীর কাছে বিচারপতি জানতে চান, এর আগে কতগুলি ফৌজদারি মামলায় তিনি অংশ নিয়েছেন। একটি মামলাতেও নয় বলে ওই আইনজীবী জানাতেই আদালত চরম বিস্ময় প্রকাশ করে।
আদালতের প্রশ্ন, আপনার জানা আছে কত মামলায় সওয়াল করার পর কোনও আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন? এ ব্যাপারে সিআরপিসিতে কী বিধান আছে, তাও জানতে চায় আদালত। কী করে তিনি সরকারি কৌঁসুলি হলেন, তা নিয়ে চুপ থাকেন ওই আইনজীবী। হতাশ আদালতের তাঁকে প্রশ্ন, কী করে আপনি সরকার এবং নির্যাতিতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন! আদালত তাঁকে জানিয়ে দেয়, তাঁর পারফরম্যান্সে হাইকোর্ট চরম হতাশ।
এর পরেই রাজ্যের লিগাল রিমেমব্রান্সারের (আইন দপ্তরের অধীন এই বিভাগের মাধ্যমেই রাজ্যের প্যানেলের কৌঁসুলি নির্বাচিত হন) কাছে ওই আইনজীবীর সম্পর্কে অসন্তোষ জানিয়ে আদালত নির্দেশের কপি পাঠিয়ে দেয়। লিগাল রিমেমব্রান্সারের বিভাগকে আদালত মনে করিয়ে দেয়, পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতাসম্পন্ন আইনজীবী না হলে আদালতের পক্ষে দ্রুত বিচার অসম্ভব। ঘটনা হলো, এ দিন যে আইনজীবীকে নিয়ে আদালতের উষ্মা, তিনি সিভিল মামলা করলেও ফৌজদারি মামলায় তাঁর কোনও অভিজ্ঞতাই নেই।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টে ফৌজদারি মামলার সরকারি প্যানেল ২০২২-এর জুনে প্রকাশ করে দু’দিনের মধ্যে স্থগিত করা হয়েছিল। এ বছর মার্চে সেই প্যানেল প্রকাশ পেলে অনেক নাম নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যেও গুঞ্জন চলছিল। সেই গুঞ্জন বাড়ে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের হয়ে মামলা লড়ার জন্যে প্যানেলের বাইরের দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের নজিরবিহীন অনুমতিতে। ওই আইনজীবীদের তাঁদের চাহিদা মতো ফি পুলিশের তহবিল থেকে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। বর্ষীয়ান পুলিশ অফিসাররা বলছেন, কেন নিজেদের মামলা লড়তে পুলিশকে পৃথক ব্যবস্থায় যেতে হচ্ছে, এ দিনের ঘটনাতেই প্রমাণিত।