ভোটে আকাল সিলিন্ডারের! বুকিংয়ের ৮ দিনেও গ্যাস না মেলার আশঙ্কা...
২৪ ঘন্টা | ১৬ এপ্রিল ২০২৪
অয়ন ঘোষাল: যোগানে সঙ্কট। দাম কমার স্বস্তি উধাও ঘরোয়া এলপিজি-তে। রাজ্যের নানা প্রান্তের ৩ টি বড় রিফিল প্ল্যান্ট থেকে এলপিজি ১৪.২ কেজির সিলিন্ডার বেরিয়ে গৃহস্থের বাড়ি বাড়ি পৌঁছায়। পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন সবকটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থা ট্রান্সপোর্টার এজেন্সির মাধ্যমে দৈনিক ৫০ লাখ সিলিন্ডার পৌঁছে দেয় রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণের ঘরে ঘরে। এখন সেই ট্রান্সপোর্টার এজেন্সিগুলি বেঁকে বসেছে। তাদের দাবি, পুরনো টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী কাজ করলে তাদের লোকসান হচ্ছে। পুরনো টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে। অগাস্ট মাসে নতুন টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। বরাত পেয়েছিল একটি এজেন্সি। কিন্তু সেই বরাত পাওয়া নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হওয়ার পর বিষয়টি আদালতে পৌঁছায়। আগের টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। নতুন করে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে। সেই প্রক্রিয়া চলাকালীন মার্চে ভোট ঘোষণা হয়ে যায়। যে এজেন্সি টেন্ডার পায়, তারা যে কর্মী বা শ্রমিক দিয়ে কাজ করায়, সকলেই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের অধীন ট্রেড ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী। যারা প্রত্যক্ষ ভাবে নির্বাচনের প্রচার বা দলীয় কাজের সঙ্গে যুক্ত। ফলে আবার তাদেরকে একসঙ্গে নিয়ে মিটিং করে সর্বসম্মত কাজের বা মজুরির শর্তগুলি ঠিক করা যাচ্ছে না। ফলে টেন্ডার ইস্যু করার গোটা প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে যোগানে। উদাহরণ স্বরূপ, পশ্চিমবঙ্গ এলপিজি ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজন বিহারী বিশ্বাস নিজে ইন্ডিয়ান অয়েলের এলপিজি ডিলার। তাঁর সিলিন্ডার আসে বজবজ রিফিল প্ল্যান্ট থেকে। তাঁর প্রতিদিন চাহিদা ১৪০০ সিলিন্ডার। কিন্তু তাঁর গোডাউনে প্রতিদিন পৌঁছাচ্ছে ৬০০ সিলিন্ডার। কিছুটা ভালো অবস্থা কল্যাণী এবং রানিনগর প্ল্যান্টের। মুর্শিদাবাদের রানিনগর প্ল্যান্ট থেকে গোটা উত্তরবঙ্গ সিলিন্ডার পায়। সেখানে এজেন্সি আপাতত পুরনো টেন্ডার রেট নিয়েই কাজ করতে রাজি। আবার কল্যাণীর ক্ষেত্রে যোগান কমে গিয়েছে অনেকটাই। সার্বিকভাবে রাজ্যের দৈনিক চাহিদা অর্থাৎ ৫০ লক্ষ সিলিন্ডারের চেয়ে গড়ে ২০ শতাংশ কম সিলিন্ডারের যোগান পাচ্ছেন ডিলাররা। আগে আপনি আজ সিলিন্ডার বুক করলে ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে বাড়িতে রান্নার গ্যাস পেতেন। কিন্তু এখন তা পেতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে ৮ দিন। পরিস্থিতি একইরকম থাকলে এই ৮ দিনের মেয়াদ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।