বৈশাখ মাসের প্রথম মঙ্গলে শুরু হল সেন বংশের প্রতিষ্ঠিত জহুরা দেবীর পুজো...
২৪ ঘন্টা | ১৭ এপ্রিল ২০২৪
রণজয় সিংহ: প্রাচীন বাংলার রাজধানী মালদহের গৌড়ে সেন বংশের আমলে তৈরি হয়েছিল জহুরা চণ্ডী মন্দির। সেন বংশের কুলদেবী ছিলেন জহুরা। জহুরা ছাড়াও আরও তিনটি চণ্ডী মন্দির তৈরি হয়েছিল সেন আমলে। সেগুলিও মালদহতেও অবস্থিত। আর সেই প্রাচীনকাল থেকেই বৈশাখ মাসের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার পূজিত হন এই দেবী জহুরা চণ্ডী। সেই নিয়ম আজও অব্যাহত।
এ বছরও সেই পুজো চলছে। বৈশাখ মাসের প্রথম মঙ্গলবার আজ। আজ তাই এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা-সহকারে মন্দিরে নিয়ে আসা হল দেবীবিগ্রহ। বৈশাখ মাস জুড়ে প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার অনুষ্ঠিত হবে দেবী জহুরা চণ্ডীর পুজো। বিশ্বাস খুবই জাগ্রত এই দেবী। তাঁর পুজোয় জেলা ও জেলার বাইরে থেকে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়।প্রাচীনকাল থেকেই রীতি মেনে বিগ্রহ তৈরি করে নিজের হাতে প্রথম পুজো দিয়ে জহুরা চণ্ডীকে মন্দিরে পাঠান মৃৎশিল্পী। ঐতিহ্য সহকারে এই নিয়ম মেনেই জহুরা চণ্ডীর বিগ্রহ তৈরি করে আসছেন মালদা শহরের কালীতলার পাল পরিবার। তেরো পুরুষ ধরে প্রাচীন জহুরা চণ্ডীর বিগ্রহ তৈরি করে আসছে পরিবারটি। এখন মূর্তি তৈরি করছে এই বংশের বর্তমান প্রজন্ম। পাল পরিবারের বর্তমান অভিভাবক জ্যোতির্ময় পাল জহুরা চণ্ডীর বিগ্রহ তৈরি করেছেন। পূর্বপুরুষের নিয়ম মেনেই বর্তমান বাড়ির বড় ছেলে বিগ্রহ তৈরি করছেন। তিনি বারোতম উত্তরসূরি। তাঁর ছেলে বাবাই পাল তেরোতম উত্তরসূরি হয়ে বিগ্রহ তৈরিতে এখন থেকেই বাবাকে সাহায্য করছেন।প্রাচীন কাল থেকেই মালদার ইংরেজবাজারের জহুরাতলায় পূজিত হয়ে আসছেন মা জহুরা। জহুরা চণ্ডীর নামেই গ্রামের নাম হয়েছে জহুরা তলা। বৈশাখ মাসের প্রথম শনিবার বা মঙ্গলবার প্রথম জহুরা চণ্ডীর পুজো হয়। রীতি মেনে পুজোর দিন সকালে বিগ্রহ রং করা হয়। জহুরা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে পায়ে হেঁটে শোভাযাত্রা করে লাল কাপড়ে ঢেকে নিয়ে আসা হয় বিগ্রহ। পথে প্রথমে মন্দিরের পুরোহিতের বাড়িতে পুজো হয়। তারপর মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করে শুরু হয় পুজো।প্রথম দিনেই জেলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে দেবী জহুরার পুজো দিতে। এই পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার একমাস ব্যাপী একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয় মন্দির প্রাঙ্গণে।