কলকাতার প্রথম মেয়রের শপথের শতবর্ষপূর্তি, জুটল না মালাও, অনাদরেই চিত্তরঞ্জন দাস
২৪ ঘন্টা | ১৭ এপ্রিল ২০২৪
দেবারতি ঘোষ: মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল। এই দিনটি কলকাতার ইতিহাসে তথা কলকাতাবাসীদের ইতিহাসে এক গর্বের দিন। কারণ ঠিক ১০০ বছর আগে ১৯২৪ সালের এই ১৬ এপ্রিল কলকাতার প্রথম ভারতীয় বাঙালি মেয়র হিসেবে শপথ নেন শ্রী চিত্তরঞ্জন দাস, যিনি দেশবন্ধু নামে পরিচিত। শপথের একশো বছর পর আজকের এই দিনটিতে কলকাতা পুরসভার মেয়রের গলায় একটা মালাও কেউ দিল না। তিনি পড়ে রইলেন অনাদরে।
১৯০৯ সাল থেকেই ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ভারতীয়দের শাসনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করার জোরাল দাবি উঠেছিল তৎকালীন ভারতীয় কংগ্রেসের তরফ থেকে। কিন্তু ব্রিটিশরা বিভিন্ন কারণে সেগুলি হতে দিচ্ছিলেন না। ১৯১৭ সালে কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন অ্যাক্ট এর একটি প্রস্তাবনা হয় কিন্তু সেটি সেভাবেই পড়ে থাকে। ব্রিটিশ গভর্মেন্টের কোন সদিচ্ছা ছিল না সেটিকে আইনে পরিণত করার। এরপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা ভারতীয়দের কিছুটা হলেও স্বায়ত্তশাসন দিতে বাধ্য হয় এবং সেই সূত্রে পৌরসভাগুলি পরিচালনা করার ভার আসে ভারতীয়দের হাতে। সেইমতো কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন অ্যাক্ট ১৯২৩ প্রণীত হয় ও তা আইনসভায় পাস হয়। এর অনেকটা কৃতিত্বই রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের, যার নামাঙ্কিত রাস্তার উপরে আজও দাঁড়িয়ে আছে কলকাতা পৌর সংস্থার মূল ভবনটি।
ক্যালকাটা মিউনিসিপাল অ্যাক্ট ১৯২৩ অনুসারেই, ১৯২৪ সালের মার্চ মাসে কলকাতা পৌরসংস্থার নির্বাচন হয়। এই ভোটে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল মহিলাদের ভোটাধিকার ও ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার দেওয়া। সেই সময় কিছু মতানৈক্যের কারণে মতিলাল নেহরু, চিত্তরঞ্জন দাসের মতো বেশ কিছু নেতা মূল কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে স্বরাজ্য পার্টি গঠন করেন। এবং সেই স্বরাজ্য পার্টি কলকাতা পৌরসভার ভোটে অংশগ্রহণ করে এবং জয়লাভ করে। এরপর ১৬ এপ্রিল ১৯২৪ তারিখে মেয়রের পদে নির্বাচন হয় ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস কলকাতার প্রথম ভারতীয় মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। আজ সেই দিনটির ১০০ বছর পূর্ণ হল।
দেশবন্ধুর সঙ্গে প্রথম ডেপুটি মেয়র হন হোসেন সুরাবর্দি। একমাস পরে অর্থাৎ ১৯২৪ এর মে মাসে কলকাতা পৌর সংস্থার প্রথম সিইও হিসাবে যোগদান করেন সুভাষচন্দ্র বসু। কলকাতা পুরভবনের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়েই প্রথমেই চোখে পড়বে তাঁর ছবি। কিন্তু মঙ্গলবার পুরসভায় কোন অনুষ্ঠান তো দূরস্ত। তাঁকে স্মরণ করার জন্য ছবিতে একটা মালাও দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে পুরসভার অন্তরেই অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।