• চোরাই গাড়ি সাপ্লাই ভোটের প্রচারে! পুলিশের জালে পান্ডা
    এই সময় | ১৭ এপ্রিল ২০২৪
  • অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়াদিল্লি

    ডান-বাম, শাসক-বিরোধী—যে দলই হোক না-কেন, ভোট প্রচারে প্রত্যেকেরই প্রয়োজন প্রচুর সংখ্যায় বিলাসবহুল এসি গাড়ি থেকে হুড খোলা জিপ৷ যাতে সওয়ার হয়ে প্রচার সারবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা৷ রাতারাতি দামি গাড়ি কেনা সমস্যার বুঝে গাড়ি ভাড়া নিতে হচ্ছে সব দলকেই। লোকসভা ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরে অনেকে এই সব গাড়ির ভাড়া অনেকগুণ বাড়িয়েও দিয়েছে।এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে মোটা দামে গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ‘সিন্ডিকেট’ খুলে বসেছিলেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানার এক শ্রেণির ব্যবসায়ী৷ রাজনৈতিক দলগুলিকে চাহিদামতো গাড়ি জোগান দেওয়ার জন্য রাতারাতি দিল্লিতে তৈরি করে ফেলা হয়েছিল গাড়ি চুরির গ্যাং৷ সূত্রের দাবি, এই চক্রটি গত তিন সপ্তাহে ৫০টির বেশি বিলাসবহুল গাড়ি চুরি করে ফেলেছিল দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকা থেকে৷

    তারপরে সেই চোরাই গাড়ি পাচার করা হয়েছিল পাঞ্জাব, হরিয়ানায়৷ এই গাড়িতে করেই চলছিল নির্বাচনী প্রচার৷ বলিউড চিত্রনাট্যকেও হার মানায় এই গল্প! ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে রাজধানী দিল্লিতে—এমনই দাবি করা হচ্ছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ সূত্রে৷ একের পর এক গাড়ি চুরির অভিযোগের তল্লাশি করতে গিয়ে যখন মাথার ঘাম পায়ে ফেলেও প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছেন দিল্লি পুলিশের তদন্তকারীরা, ঠিক সেই সময়েই তাঁদের হাতে আসে সুনির্দিষ্ট লিড৷

    এই লিডের ভিত্তিতেই শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি৷ সেই তল্লাশিতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে হরপ্রীত নামের বছর তিরিশের এক যুবক, যে কি না এই গাড়ি চুরি চক্রের মাস্টারমাইন্ড বলে দাবি তদন্তকারীদের৷ দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ধারাবাহিক জেরার পরে হরপ্রীত জানায়, পাঞ্জাবের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি-টেক করার পরে চাকরি না পাওয়ায় বিকল্প রাস্তার খোঁজে নামে সে৷

    এই সূত্রেই তার হাতের সামনে চলে আসে ভোটের মরশুমে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় গাড়ি সাপ্লাইয়ের সুযোগ৷ আর পিছনে ফিরে তাকায়নি হরপ্রীত৷ রাতারাতি নিজের শাগরেদদের নিয়ে গড়ে তোলে গাড়ি চুরির গ্যাং৷ সেই গ্যাংয়ের সদস্যরাই দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় রাতের পর রাত অভিযান চালিয়ে লোকেদের বিলাসবহুল গাড়ি চুরি করত৷

    এরপর বিভিন্ন হাত ঘুরে সেই গাড়ি পৌঁছত পাঞ্জাব ও হরিয়ানায়—যেখানে মোটা টাকা ভাড়া দিয়ে সেই গাড়ি নিতেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা৷ দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা মনে করছেন, শুধু পাঞ্জাব আর হরিয়ানা নয়, দেশের অন্যান্য প্রান্তের গাড়ি চুরির কারবারীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল হরপ্রীত ও তার দলবল৷ এই মর্মেই চলছে জেরা ও তল্লাশি অভিযান— দাবি দিল্লি পুলিশ সূত্রে৷
  • Link to this news (এই সময়)