• বলতে পারতাম, বলব না! ‘অসভ্য’দের তোপ মমতার
    এই সময় | ১৭ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: চালসায় যারা চোর-চোর স্লোগান দিয়েছে, তাদের ‘অসভ্যের দল’ বলে চিহ্নিত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে প্রবল অসন্তুষ্ট হলেও এই ‘অসভ্য’দের জিভ কেটে নেওয়ার কথা তিনি বলতে চান না বলেও জানালেন তৃণমূলনেত্রী। নির্বাচনী প্রচারে গত রবিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারে গিয়েছিলেন মমতা। চালসায় হোটেল যাওয়ার পথে তাঁর উদ্দেশে বিজেপির পথসভা থেকে চোর-চোর স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মমতার কনভয় অবশ্য নিরুপদ্রবেই গন্তব্যে পৌঁছয়। কিন্তু এই ঘটনায় তিনি যে প্রবল ক্ষুব্ধ, তা মঙ্গলবার ময়নাগুড়ির সভায় স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলনেত্রী।জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী নির্মল রায়ের সমর্থনে জনসভায় মমতা বলেন, ‘আমার সঙ্গে ওরা অসভ্যতা করেছে কয়েক দিন আগে। আমি চালসায় আসছিলাম। যে কোনও রাজনৈতিক দল রাস্তায় মিটিং করতেই পারে। আমার কোনও আপত্তি নেই। আমার গাড়ি দেখে বলছে, চোর-চোর। ওদের জিজ্ঞেস করুন, ওদের পিতৃদেবের পয়সায় আমি কোনও দিন এক কাপ চা খেয়েছি? আমি দোকানে চা খেতে গেলেও পয়সা দিয়ে খাই।’

    মমতার গাড়িকে লক্ষ্য করে চোর-চোর স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় ওই দিনই তৃণমূলের পক্ষ থেকে কুণাল ঘোষ কড়া ভাষায় জবাব দিয়েছিলেন। বিজেপি এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করলে তৃণমূল গেরুয়া নেতৃত্বকে নিশানা করে পাল্টা প্রচারের রাস্তায় যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। মমতা এ দিন বলেন, ‘এত বড় সাহস, আমার গাড়িকে দেখে বলছে চোর-চোর-চোর! সুযোগ থাকলে জিভটা আমি কেটে নিতাম। ইলেকশন বলে কিছু বলিনি। ইলেকশন না-থাকলেও আমি জিভ টেনে নেওয়ার কথা বলব না।’

    এরপরই প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানা করে তাঁর আক্রমণ, ‘মোদী এই ভাবে বলে, চুন চুনকে দেখ লেঙ্গে। চুন চুনকে সবকো জেল মে ভর দেঙ্গে। যদি আপনি জিততেন, তা হলে কি এই কথাই বলতেন? নিশ্চয়ই বলতেন না। এই কথা আপনার মুখে শোভা পায় না। অমিত শাহ কী বলেছিল বালুরঘাটে? বলেছে, সব কো লটকা দেঙ্গে। আমি বলছি, গণতন্ত্রে লোক তোমাদের ঝটকা দেবে। তৈরি থাকো।’

    ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিরোধী শিবির দুর্নীতি ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ‘চোর-চোর’ স্লোগান দেওয়া শুরু করে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব বারবার যুক্তি দিয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় ও প্রশাসনিক স্তরে পদক্ষেপ করা হয়েছে। সেখানে সরাসরি মমতারকে নিশানা করে বিজেপি কিছু কর্মীর এই স্লোগানবাজি কোনওভাবেই মেনে নিতে রাজি নয় তৃণমূল।

    মমতা নিজেও এ দিন বলেন, ‘আমি সরকার থেকে একটা টাকাও মাইনে নিই না। আমি সরকারি গাড়িও চড়ি না। আমি ইচ্ছে করলে প্রতি মাসে দেড় লক্ষ টাকা পেনশন পেতে পারি। লক্ষ টাকার উপরে মাইনে পেতে পারি। আমি এক টাকাও নিই না।’ গেরুয়া শিবিরের এই স্লোগানবাজির পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে বিজেপির এক নেত্রর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে হুঁশিয়ারি দেওয়াতেও প্রবল চটেছেন মমতা।

    এ দিন শিলিগড়িতে রোড-শো’র পর জনসভায় মমতা বলেন, ‘মায়েদের অভিশাপ তোমাদের কলঙ্কিত করবে। তোমাদের দেশ থেকে তাড়াবই। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেওয়ার অধিকার তোমাদের কে দিল? এত বড় সাহস! তোমরা দেশে ক্ষমতায় আসবে না, বাংলায় জ়িরো হবে।’ বিজেপি নেত্রীর হুঁশিয়ারির তীব্র সমালোচনা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
  • Link to this news (এই সময়)