• Capital Punishment: গুজবের জেরে পিটিয়ে খুন, আলজিরিয়ায় মৃত্যুদণ্ড ৪৯ জনের
    এই সময় | ২৫ নভেম্বর ২০২২
  • গুজব ছড়িয়ে পুলিশের সামনেই এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন। সেই মামলায় ৪৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল আলজিরিয়ার আদালত। একসঙ্গে এতজনের প্রাণদণ্ডের সাজা কার্যত নজিরবিহীন বলেই দাবি করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। উল্লেখ্য, ১৯৯৩-তে শেষবার আলজিরিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। সেই ঘটনার ২৯ বছর পর ফের প্রাণদণ্ডের নির্দেশ দিল উত্তর আফ্রিকার এই দেশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২১-এ গুজব ছড়ানোর জন্য ৩৮ বছরের দেজামেল বেন ইসমাইলের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়। গণপিটুনির হাড়হিম করা সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছিল। ভিডিয়োতে পুলিশের ভ্যান থেকে টেনে নামিয়ে বেন ইসমাইলকে বেধড়ক মারধর করতে দেখা গিয়েছিল। খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য ইসমাইলের অঙ্গচ্ছেদও করা হয়। বনাঞ্চলে আগুন লাগানোর নেপথ্যে বেন ইসমাইলের হাত রয়েছে বলে গুজব ছড়িয়েছিল। সেই কারণেই তাঁর উপর হামলা হয়েছিল বলে আদালতে জানায় পুলিশ। ওই মামলায় আরও ২৮ জনকে কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আলজিরিয়ার আদালত।

    স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, পেশায় চিত্রশিল্পী বেন বনাঞ্চলের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন। একটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। ঘটনার দিন মিলিয়ানা প্রদেশে দাবানলের খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন বেন। ওই দিন বনাঞ্চলের আগুন স্থানীয় উপজাতিদের গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়। বেন ওই এলাকায় পৌঁছতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। বেনের জন্যেই বনাঞ্চলে আগুন লেগেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। জনতা মারমুখী হয়ে পড়লে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। বেনকে উদ্ধার করে ভ্যান তুলে নেন তাঁরা। কিন্তু ভ্যান ঘিরে ফেলেন চলতে থাকে বিক্ষোভ। ওই সময় বেনকে ভ্যান থেকে টেনে নামিয়ে আচমকাই শুরু হয়ে যায় মারধর। গণপিটুনি থেকে তাঁকে বাঁচানোর জন্য পুলিশ কর্মীরা চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তাতে সক্ষম হননি।

    গত কয়েক বছর ধরেই বনাঞ্চলের অগ্নিকাণ্ড একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে আলজিরিয়ায়। দাবানলের জেরে তাপমাত্রার পারদ দিনকে দিন বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে কৃষিকাজে। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগুন বনাঞ্চল সংলগ্ন উপজাতিদের গ্রামগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে। আলজিরিয়া প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি বছর বনাঞ্চলের অগ্নিকাণ্ডের জেরে ১০০ থেকে ১৫০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।

    এছাড়াও বনাঞ্চলের এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ে চলছে দোষারোপ ও পালটা দোষারোপ। যার জেরে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন উপজাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের মতো ঘটনাও ঘটছে উত্তর আফ্রিকার এই দেশে। বেনের হত্যাকারীদের সাজা ঘোষণার পর এই নিয়ে মুখ খুলেছে তাঁর পরিবার। সবাইকে শান্তিতে থাকার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
  • Link to this news (এই সময়)