রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ভবন হোক রাস্তাঘাট, শহর কলকাতা থেকে বিভিন্ন জেলা, বাংলার দিকে দিকে চোখ ঘোরালেই নজরে আসবে নীল-সাদা রং। এবার সেই তালিকায় নয়া এক সংযোজন। বদলে গেল কলকাতার শতাব্দী প্রাচীন টালা ট্যাঙ্কের রংও। এতদিনের রং বদলে এবার নীল-সাদায় সেজে উঠল টালা ট্যাঙ্ক। ১১৩ বছর বয়সে এসে বদলে গেল বিশ্বের অন্যতম বড় এই জলাধারের বাইরের দেওয়ালের রং।উত্তর কলকাতার, পাতিপুকুর থেকে কলকাতা স্টেশন ঢোকার মুখে বাঁদিকে তাকালেই চোখে পড় বিশাল আকারের এই জলাধার। তবে নতুন রঙে সেজে ওঠার পর দূর থেকে টালা ট্যাঙ্ককে দেখে যে কারও মনে হতে পারে, হয়ত সেটি কোনও উড়ালপুর বা বড় রাস্তার ডিভাইডার। তবে কাছে গেলে অবশ্য ভুল ভাঙবে, বোঝা যাবে ওই নীল-সাদা রং আসলে করা হয়েছে টালা ট্যঙ্কে। নীল-সাদা রং এবং বরফি সাইজের নক্সায় সম্পূর্ণ ভোল বদলে গিয়েছে ট্যাঙ্কের।
একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েকবছর ধরে ধাপে ধাপে সংস্কারের পর গত বছর থেকে পুরোদমে চালু হয়েছে টালা ট্যাঙ্ক। পুরসভা সূত্রে খবর, ১০০ বর্গমিটার আয়তনের এই জলাধার সংস্কারের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার লিটার রং। বিশ্বের বৃহত্তম ওভারহেড জলের ট্যাঙ্কে যে রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে, তা সাধারণ বাজারচলতি নয়। পানীয় জলের বিশুদ্ধতা ও জলাধারের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বিশেষ রঙের পোচ দেওয়া হয়েছে। ট্যাঙ্কের বাইরের দেওয়ালে যে রং দেওয়া হয়েছে তার বিশেষত্ব হল অতিবেগুনি রশ্মি নিরোধক এবং ভিতরে রং মরচে নিরোধক রং। সবচেয়ে বড়ে কথা যে রং সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে, তার পুরোটাই সীসাহীন। নীল-সাদা রঙে একেবারে নবরূপ পেয়েছে টালা ট্যাঙ্ক। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে রং করা হয়েছিল হাওড়া ব্রিজ। সেই কাজে ব্যবহার হয়েছিল প্রায় ২৬ হাজার লিটার সীসাহীন রং। তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি রং লেগেছে টালায়।
তবে টালা ট্যাঙ্ক যেহেতু হেরিটেজ, তাই রং বদল নিয়ে কোনও জটিলতা হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তরে এক পুরকর্তা বেসরকারি ওই সংবাদমাধ্যমকে জানান, টালা ট্যাঙ্ক শহরের ঐতিহ্য, কিন্তু খাতায়কলমে এখনও তা হেরিটেজ তালিকাভুক্ত নয়। ফলে কোনও সমস্যাও নেই। তাঁ মতে, সব সরকারি বাড়িঘরই যখন নীল-সাদা হয়েছে, তখন টালাই বা আর বাদ থাকে কেন?