Dubai Rain: ভাসছে মরুশহর! একদিনের বৃষ্টিতে কেন এই বিপর্যয় দুবাইয়ে?
এই সময় | ১৭ এপ্রিল ২০২৪
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সবচেয়ে স্মার্ট শহর বিশ্বের প্রায় সমস্ত কোটিপতিদেরই ফেভারিট উইকেন্ড ডেস্টিনেশন। মুকেশ আম্বানি থেকে শুরু করে শাহরুখ-সলমান সকলেরই বসবাসের আরেকটি প্রধান ঠিকানা হল এই মরুশহর। কিন্তু আচমকা বিপর্যয়ে বিদ্ধস্ত দুবাই।শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত। জলের তলায় চলে গেছে শহরের ঝাঁ চকচকে শপিং মল থেকে শুরু করে হাইওয়ে। জলের তলায় চলে গেছে দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছে বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরটি। আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ রাখা হবে বলে বিমানবন্দর প্রসাসনের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। জলে ভরা বিমানবন্দর থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন জায়গার ভিডিয়ো দেখে তাজ্জব গোটা বিশ্ব।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর প্রতিবেশী ওমানে সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বৃষ্টিতে। সেখানে বিপর্যয়ে ১০ জন স্কুলের ছাত্র সহ এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেক মানুষ।
মরুভূমির দেশ এই সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। এখানে বৃষ্টি হয়না বললেই চলে। আর সেখানেই এমন বৃষ্টি ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। মঙ্গলবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুবাইয়ের দুর্যোগের একের পর এক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে খেলনার মত জলে ভাসছে মার্সিডিজ, ল্যাম্বরগিনির মতো দামি গাড়ি।
কিন্তু কেন মরুদেশে এমন বৃষ্টি হলো?দুবাইয়ের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ‘ক্লাউড সিডিং’-কেই দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির কারণেই বানভাসি হয়েছে বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর দুবাই।
‘ক্লাউড সিডিং’ বা ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ কী?বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উষ্ণতম এবং শুষ্ক মরু অঞ্চল হল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। সেখানে বৃষ্টি প্রায় হয়না বললেই চলে। আর সেই কারণেই বৃষ্টির পরিমাণ বাড়াতে ‘ক্লাউড সিডিং’ প্রযুকতির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যার ফলে কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরি করা যায়। ই প্রযুক্তির আসল উদ্দেশ্য হল, মরু এলাকায় জলের ঘাটতি মেটানো।
কীভাবে তৈরি করা হয় ‘ক্লাউড সিডিং’?এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরি করা হয়।এই প্রক্রিয়ায় হেলিকপ্টারবা বিমানে করে সিলভার আয়োডাইড অথবা পটাশিয়াম আয়োডাইড বায়ুমণ্ডলে পাঠানো হয়। তারপরে কণাগুলির জলীয় বাষ্পের ঘনীভবন এবং বৃষ্টির ফোঁটা বা বরফের স্ফটিক তৈরি করতে সাহায্য করে। যা পরে মেঘ তৈরি করে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
‘ক্লাউড সিডিং’ কী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর?পরিবেশবিদদের মতে, এই প্রক্রিয়া আদৌ পরিবেশের জন্য ভাল নয়। এর নানান ক্ষতিকর প্রভাব পারে। যেসব এলাকায় ক্লাউড সিডিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, সেখানে সাধারণত অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য পরিকাঠামো থাকে না। ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বনয পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
একটি মিডিয়া রিপোর্ট সূত্রে জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পড়শি দেশ ওমানে ক্লাউড সিডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের মতে, সিলভার আয়োডাইডের মতো রাসায়নিকের ব্যবহারে পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।
এই পদ্ধতিতে মহাসাগরের অ্যাসিডিফিকেশন, ওজন স্তর হ্রাস এবং বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। যা গাছপালা এবং প্রাণীদের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।