অশান্তির আশঙ্কা, অনুমতি দিয়েও রামনবমী পালনের নির্দেশ প্রত্যাহার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে
প্রতিদিন | ১৭ এপ্রিল ২০২৪
রমেন দাস: অনুমতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অশান্তির আশঙ্কায় রামনবমী (Ram Navami) পালনের নির্দেশ প্রত্যাহার করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। এসএফআইয়ের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর মঙ্গলবার গভীর রাতে নির্দেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রামনবমী পালন করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন একদল ?রামভক্ত? পড়ুয়া। সেইমতো বুধবার সকাল ১১ টা থেকে ২ টো পর্যন্ত ক্যাম্পাসে কোনও শোভাযাত্রা ছাড়া শুধুমাত্র পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি বহিরাগত প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে রামনবমী পালনের বিরোধিতায় শুরু থেকেই সরব ছিল এসএফআই-সহ একাধিক বাম ছাত্র সংগঠন। সেইমতো রেজিস্টারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় তারা। যেখানে বলা হয়, ওই আবেদনকারী ১০৩ জনের মধ্যে বহু নাম ভুয়ো। তাঁদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও যোগ নেই। পাশাপাশি ধর্মের নামে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এর পরই মাঝরাতে হঠাৎ সেই অনুমতি বাতিল করেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু।
অনুমতি বাতিলের পিছনে মূলত ৩ কারণ তুলে ধরা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ক্যাম্পাসে রামনবমীর পুজো চেয়ে যেসব পড়ুয়া আবেদন করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই দাবি করেন, অনুমতি ছাড়া তাঁদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বেশকিছু অভিযোগ এসেছে যেখানে বলা হয়েছে এর ফলে ক্যাম্পাসে শান্তি শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতির বাতাবরণ খারাপ হবে। এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে চিঠি এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে বর্তমানে আদর্শ আচরণবিধি লাগু রয়েছে। তা যেন ভালোভাবে মানা হয়। এই কারণগুলিকে মাথায় রেখেই বাতিল হয়েছে রামনবমীর অনুষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রামনবমীর অনুষ্ঠান বাতিল করার ঘটনায় এবিভিপির তরফে জানানো হয়েছে, ?এটা অফিশিয়ালি আমাদের তরফের কোনও অনুষ্ঠান নয়। কিন্তু রামের নাম শুনলেই এঁরা রেগে যাচ্ছেন। আসলে ধর্মের নামে অশান্তি আমরা করছি না। বাম ছাত্র সংগঠন হিন্দু ধর্ম, রাম শুনলেই রেগে যাচ্ছে।?
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন রীতিমতো উত্তপ্ত হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসের মধ্যে সেই অনুষ্ঠানের স্ক্রিনিং শুরু হতেই অশান্তি চরম আকার নেয়। হাতাহাতি থেকে পরিস্থিতি মারামারির পর্যায়ে যায়। সেই ঘটনার পর এবার রামনবমীর অনুষ্ঠান পালনের অনুমতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত অশান্তির আশঙ্কায় সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল কর্তৃপক্ষ।