ভোটের আগে কলকাতায় পিঠে বানাতে আসছেন সন্দেশখালির মহিলারা
এই সময় | ১৮ এপ্রিল ২০২৪
ভোটের মুখে আবারও চর্চার কেন্দ্রে সন্দেশখালির পিঠে। তবে এ পিঠে, সে পিঠে নয়! এক সময়ে শাহাজাহান বাহিনীর হুকুম এলেই না ঘুমিয়ে রাতবিরেতে পিঠে বানাতে যেতে হতো সন্দেশখালির মহিলাদের। সেখানে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের। পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে সেই ইস্যুতে নিয়ে সরব হয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও।সেই পিঠের স্বাদ চেনাতে এবারে কলকাতায় ডাক পড়ল সন্দেশখালির মহিলাদের। চাইলে শহরের বাসিন্দারা সেই স্বাদের ভাগ নিতে পারবেন। আগামী ২০ এপ্রিল টালা পার্কের বসুন্ধরায় একটি অভিনব খাদ্য উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে। সেখানে মেনু তালিকায় থাকছে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অর্গানিক খাবার।
তার সমস্ত উপকরণ আসবে সন্দেশখালি থেকে। খাবারের তালিকায় থাকছে, তেলে ভাজা পিঠে, পুরের পিঠে এবং পাটি সাপটা। দুপুরের মেনুতে থাকছে চোদ্দ শাক, চৈতি মুগের ডাল, কালো মোটা চালের পান্তাভাত, হলদে বাটালি চালের পান্তাভাত। দেশি চাল দিয়ে বানানো হবে পোলাও। চিনা কামিনী এবং চৈতি মুগ ডাল দিয়ে বানানো হবে খিচুড়ি। শাক-সব্জির মধ্যেও থাকছে অভিনবত্ব।
শহরের অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁয় যে মেনুগুলো সচরাচর পাওয়া যায় না সেগুলো নিজেদের হাতে রান্না করে খাওয়াবেন সন্দেশখালির মহিলারা। যেমন, থানকুনি পাতা বাটা, সজনে পাতার বড়া, কলার মোচা, আলু, ডাল ও চিংড়ির তরকারি। এছাড়া সজনে ডাটা, গাজর, পেঁপে, লাল আলু, বরবটি দিয়ে একটি পাঁচমিশালী সব্জির তরকারি করা হবে।
ফিস আইটেমেও থাকছে চমক। মূলত বাংলার দেশি মাছ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি হবে। যেমন, গাঁদাল পাতা দিয়ে মৌরলা মাছ, চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুশাক, খাম আলু, শোলা কচু দিয়ে পোনা মাছ। সবশেষে থাকছে চালতা ও কাঁচা আমের চাটনি এবং সুগন্ধি চাল ও নারকেল দুধের পায়েস।
এই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক বসুন্ধরা অর্গানিক নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংস্থার অন্যতম কর্তা রবীন বন্দ্যোপাধ্যায় জৈব আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। সন্দেশখালি সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তিনি স্থানীয় কৃষকদের দিয়ে অর্গানিক সব্জি উৎপাদন করান। তাঁর দাবি, অর্গানিক খাবারকে জনপ্রিয় করে তুলতেই এই ধরনের একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যে কেউ টালায় হাজির হতে পারেন। সে জন্য খুব কম দাম ধার্য করা হয়েছে।
কিন্তু ভোটের বাজারে হঠাৎ করে সন্দেশখালির মহিলাদের দিয়ে খাবার বানানোর বাসনা জাগলো কেন, এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই তো? রবীন বলেন, ‘দীর্ঘদিন সন্দেশখালিতে কাজ করার সুবাদে আমি জানি ওখানকার মহিলারা খুব ভাল রান্না করেন। পিঠে নিয়ে হয়তো আজকাল বেশি চর্চা হচ্ছে, কিন্তু ওরা শাক-সব্জি, মাছ, মাংসও ভাল বানায়। আমি চাই সন্দেশখালির ভাল দিকটাও মানুষ জানুক। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই।’