২০২৪ সালের শুরু থেকেই গরমের দাবদাহে নাজেহাল হচ্ছে মানুষ। মার্চ এপ্রিল মাসের গরমে হিমসিম খেতে হচ্ছে আম জনতাকে। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, একই অবস্থা ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোরও। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আসন্ন মে মাসেও গরমের দাপট নেহাতই কম হবে না। এবছর আবার প্রবল গরমের সঙ্গে তাপপ্রবাহেরও পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন।তবে এবার গ্রীষ্ম আর বর্ষার সমীকরণটা বদলে যেতে পারে বলেই পূর্বভাস দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছিলেন, লা নিনা আসছে। তার জেরেই ওলট পালট হতে পারে ভারতের মরশুম। তবে এই সব সতর্কতার মাঝেই তীব্র দাবদাহে তেতে পুড় একসা হচ্ছে জনজীবন। ২০২৩ সাল থেকে চলা এল নিনোর প্রভাবেই এণন অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন আবহবিদরা।
এরই মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর শোনাল অস্ট্রেলিয়ারব্যরো অফ মেটিওরোলজি বা বিওএম। মঙ্গলবার বিওএম জানিয়েছে, এল নিনো সাউদার্ন অসিলেশন নিরপেক্ষ অবস্থায় ফিরে এসেছে। এর ফলে ফিরে আসবে লা নিনা।
এল নিনো কী?স্প্যানিশ ভাষায় এল নিনোর অর্থ হল ছোট ছেলে। এটি জলবায়ুরএকটি প্যাটার্ন যা মধ্য ও পূর্ব প্রসান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চ তাপমাত্রা দ্বারা চিহ্নিত। এই ঘটনাটি সাধারণত প্রতি দুই থেকে সাত বছরে ঘটে এবং স্থায়ী হয় নয় থেকে বারো মাস। এল নিনো প্রভাবিত করে সারা বিশ্বের আবহওয়াকে।
লা নিনা কী?লা নিনা হলো একটি স্প্যানিশ শব্দ, যার অর্থ হল little ‘বালিকা’। এল নিনোর ঠিক বিপরীত হচ্ছে লা নিনা। এই সময় প্রশান্ত মহসাগরীয় অঞ্চলে পূর্ব থেকে পশ্চিমে বয়ে চলা বাযুর পরিবর্তন ঘটে। তখন উষ্ণ জলস্রোত জলস্রোত প্রবাহিত হতে থাকে পশ্চিমের দিকে। লা নিনা চলাকালীন সমুদ্রের গভীর থেকে উঠে ঠান্ডা জল সমুদ্রের উপরিভাগে উঠে যায়। যার ফলে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ঠান্ডা হয়ে যায়। এল নিনো যেমন তীব্র তাপপ্রবাহের কারণ, তেমনি লা নিনা ঠিক এর উল্টোটা। লা নিনা প্রভাব ফেলতে পারে বর্ষায়। এর ফলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণে তারতম্য ঘটে। শুরু হয় প্রবল বর্ষণ। স্বাভাবিক আবাওয়ার পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। সেরকমই কিছু ঘটতে চলেছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
ভারতের আবহাোয়া বিভাগ আইএমডি জানিয়েছে, জুন- সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষার শেষার্ধে গড় বৃষ্টিপাত হতে পারে। অগাস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ লা নিনার পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।