স্কুলের ইউনিফর্ম ছাড়া অন্য় কোনও পোশাক পরে স্কুলে আসা মানা। তা সত্ত্বেও কয়েকজন পড়ুয়া গেরুয়া পোশাক পরে ক্লাস করতে চলে এসেছিল স্কুলে। তা দেখে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওই পড়ুয়াদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় পাশাপাশি গার্জেন কলও হয়। অভিযোগ এরই প্রতিবাদে স্কুলে একদল গেরুয়াধারী হিন্দুত্ববাদী হামলা চালায়। ঢিল-পাটকেল ছুড়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় স্কুলে। তেলঙ্গনার একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের ঘটনা। ব্য়াপক ভাঙচুর চালানোর অভিযোহ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের একদল সদস্য়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, 'হনুমান দীক্ষা' উপলক্ষে গেরুয়া পোশাক পরে আসতে পড়ুয়াদের নিষেধ করা ও অভিভাবকদের ডেকে পাঠানোর ভাঙচুর চালায় অভিযুক্তরা।ঘটনা ১৬ এপ্রিলের। উত্তর তেলঙ্গানার কান্নেপল্লি গ্রামে সেন্ট মাদার টেরিজা নামে একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে এই স্কুল। মিশনারিরাই সেই স্কুলটি চালায়। হঠাৎই দেখা যায় একদল পড়ুয়া গেরুয়া পোশাক পরে স্কুলে এসেছে। বিষয়টি চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের শিক্ষকরা তা জানান প্রিন্সিপালকে। প্রিন্সিপাল বিষয়টি দেখেই কড়া হাতে ব্য়বস্থা নেন। ওই পড়ুয়াদের বকাঝকার পর স্কুলে গেরুয়া পোশাক পরে আসতে নিষেধ করেন তিনি। অভিভাবকদের ডেকে পাঠান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে স্কুলে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ভাইরাল ভিডিয়োতে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় ডিজিটাল) দেখা গিয়েছে, গেরুয়াধারী একদল যুবক জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে স্কুলের জানলার কাঁচ ভাঙছে। স্কুলের শিক্ষকরা হাতজোর করে তাণ্ডব থামাতে অনুরোধ করলেও কোনও কথাতেই কান দেয়নি তারা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। স্কুলের করিডোর থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন তাঁরা। অভিযোগ, কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রিন্সিপালকে ঘিরে ধরে, মারধর করা হয় তাঁকে। এমনকী জোর করে তাঁর কপালে তিলক লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
দেখুন ভিডিয়ো
ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের তরফে দু'টি FIR দায়ের হয়েছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে বাইরে থেকে গেরুয়া পোশাক পরা একদল যুবক স্কুলে মাদার টেরিজার মূর্তি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এমনকী স্কুলের সামনে জয় শ্রীরাম ধ্বনিও দেয় তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, পরীক্ষা চলছিল স্কুলে। পরীক্ষার শেষে প্রিন্সিপাল ওই ছাত্রদের স্কুলের ইউনিফর্ম পরে স্কুলে আসতে বলেন। তা না হলে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে জানান তিনি। ছাত্ররা বাড়িতে তা জানানোর পরেই স্থানীয়রা একটি মন্দির জড়ো হয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। অভিযোগে এক অভিভাবক লিখেছেন, হিন্দুদের একটি রীতি হনুমান দীক্ষা। প্রায় এক মাস ধরে এটি পালন তরা হয়। তার অভিযোগ, চতুর্থ শ্রেণির তিন ছাত্রকে হনুমান দীক্ষার পোশাকে স্কুলে ঢুকতে দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁর অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রিন্সিপাল ও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ধর্মাচারণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছেন। অভিভাবকদের অভিযোগ ধর্মের মধ্য়ে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে স্কুলে। পালটা স্কুলে ভাঙচুর, মারধর সহ একাধিক অভিযোগে স্কুল কর্তৃপক্ষ এফআইআর দায়ের করেছে।