ছোটবেলায় পিতৃহারা, প্রস্তুতি চলাকালীন মৃত্যু মায়ের! শোককে জেদে বদলে সিভিল সার্ভিসে দ্বিতীয় অনিমেষ
এই সময় | ১৮ এপ্রিল ২০২৪
বাবা-মা দুজনে হারিয়েও নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকেছেন ওড়িশার অনিমেষ প্রধান। ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি চলাকালীন গত মাসেই হরিয়েছেন মাকে। মাতৃশোকও থামাতে পারেনি মনের অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে। মঙ্গলবার ইউপিএসসি পরীক্ষার ২০২৩ এর ফল বেরিয়েছে। ততেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে অনিমেষ প্রধান।পরীক্ষায় গোটা দেশে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন ওড়িশার আঙ্গুল জেলার তালচর এলাকার ভালুগাদিয়া গ্রামের অনিমেষ। এর আগে ওড়িশা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। ২০২১ সালে এনআইটি রাউরকেল্লা থেকে কম্পিউটর সয়েন্সে ই়্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি তালচরের কলিঙ্গা ডিএভি স্কুলে পড়াশুনা শুরু করেন এবং ৯৮.৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। অনিমেষ বর্তমানে দিল্লির ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমটেডের কর্মী।
অনিমেষের বাবা হিঙ্গুলা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলন। ২০১৭ সালে হঠাৎই মৃত্যু হয় তাঁর। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মৃত্যু হয় অনিমেষের ক্যান্সার আক্রান্ত মায়েরও। তাঁর বোন আঙ্গুল জেলার চেন্দিপাড়ায় উদ্যানতত্ত্ব বিভাগে কর্মরত।
পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
অনিমেষ নিজের এই সাফল্যের জার্নির কথা সেয়ার করতে গিয়ে বলেছেন, ২০২৩ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষার ইন্টারভিউয়ের বিভিন্ন রাউন্ডের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকার সময় হঠৎই তাঁর মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি যখন খবরটি শুনি তখন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। আমি আমার মায়ের সঙ্গে খবরটি শেয়ার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষপর্যন্ত মা আর খবরটি শুনতে পাননি। আমার মা ছিলেন আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণাদাতা।’
আপাতত নয়াদিল্লিতে আছেন অনিমেষ প্রধান। তবে অনিমেষই একমাত্র সাফল্যের গল্প নন। সিভিল সার্ভিস যোগ্যতা অর্জনের চূড়ান্ত তালিকায় ১০১৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনই ওড়িশা থেকে রেকর্ড তৈরি করেছেন।
সকল প্রার্থীদের অভিনন্দন জনিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনয়ক। তিনি বলেছেন, ‘আমি ওড়িশার সমস্ত সফল প্রার্থীদের অভিনন্দন জানাই, যারা ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁরা যেন কল্যণমূলক উদ্যোগ নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন। আমি তাঁদের উজ্জ্বল ক্যারিয়ার কামনা করি সামনে।’
ইউপিএসসিতে এটাই ছিল অনিমেষের প্রথম প্রচেষ্টা। তিনি বলেছেন, ‘আপনি যদি দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে আপনার লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হন এবং সফল হওয়ার দৃঢ় ইচ্ছা থাকে তবে আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন।‘