• চা বাগানেই জয়ের চাবিকাঠি? কোন কোন ইস্যুতে ভোট দেবে আলিপুরদুয়ার?
    এই সময় | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • দুটি পাতা, একটি কুঁড়ি। পাহাড়ের কোলে চাষ হয় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। সেটিই যখন প্যাকেটজাত হয়ে পৌঁছে যায় বাজারে, সমাদৃত হয় গোটা বিশ্বের কাছে। চা বাগানকে কেন্দ্র করেই জীবিকা নির্বাহ হয় হাজার হাজার পরিবারের। ধোঁয়া ওঠা সুগন্ধী চা আপনার মেজাজকে খুশ করে তো বটেই, তবে সেই চা শ্রমিকদের আঙুলের ছাপের উপর নির্ভর করে একটি গোটা লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ। কেন্দ্র - আলিপুরদুয়ার।আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রতে কম-বেশি ১১১টি চা বাগান রয়েছে। কুমারগ্রাম থেকে নাগরাকাটা বেশিরভাগ বিধানসভা চা বাগান অধ্যুষিত। তাই, বলা হয় চা শ্রমিকদের মন যাঁরা চাঙ্গা রাখতে পারবেন, ভোট যুদ্ধে জয়ী হবেন তাঁরাই। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কান ঘেঁষে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। গত লোকসভায় এই আসনটি দখল করে নেয় বিজেপি। তারপর থেকেই চা শ্রমিকদের জন্য বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চালু হোক, জমির পাট্টার বদলে খতিয়ান থেকে শুরু করে সামগ্রিক আদিবাসী উন্নয়ন এই তিন ইস্যুতে নির্ভর করছে ভোটের ভাগ্য।

    চা সুন্দরী প্রকল্প, শ্রমিকদের পাট্টা প্রদান, ৫৩টি চা বাগানে হাসপাতাল তৈরি আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র জুড়ে ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বর্তমান সরকার। যদিও, বিরোধীদের দাবি আলিপুরদুয়ার শুধু নয়, গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই সরকারের অবহেলার পরিচয় মিলেছে দীর্ঘদিন ধরেই।

    ঝড়ে সর্বহারাদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

    সম্প্রতি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল কিন্তু অন্য কথা বলছে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে এই লোকসভা কেন্দ্রে ভালো ফল করতে পারেনি বিজেপি। এই জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত আছে ৬৪টি। জেলার ৬৮টি চা বাগান আবার ৩৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়েছে। চা বাগান অধ্যুষিত এই ৩৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে গতবছরের নির্বাচনে একটিতেও জিততে পারেনি বিজেপি। বিজেপি চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত জিতেছে। তবে সেটি কৃষি বলয়ে।

    প্রচারে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে বিজেপি বলেছিল ৪টি চা বাগান খুলে দেবে, একটিও খোলেনি। ২০১৯ সালেও চা বাগান খোলেনি। আমরা কিন্তু ৫৯টা চা বাগান খুলে দিয়েছি। আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ১৭ লাখ ৭২ হাজার ৮৭৭ জন। এর মধ্যে প্রায় ৭ লাখ মানুষ যুক্ত চা শিল্পের সঙ্গে। তাঁদের মন কাকে চাইছে? সেটাই এই কেন্দ্রের নির্ণায়ক ফ্যাক্টর। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে চা বলয়ের বাসিন্দাদের জন্য ইতিমধ্যেই তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইকের সমর্থনে প্রায় একলাখ লিফলেট বিতরণ করা হয়। চা বাগান ও শ্রমিকদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কী কী করেছে, তার খতিয়ান তুলে ধরা হয়। তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য এই আদিবাসী নেতাই এবার বাজি তৃণমূলের।

    অন্যদিকে, গতবারের জয়ী বিজেপি প্রার্থী জন বার্লাকে সরিয়ে এবার বিধাসভার বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গাকে। মাদারিহাটে বিজেপি বিধায়কের উপরেই এই লোকসভা জিতে আসার দায়িত্ব দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
  • Link to this news (এই সময়)