• শ্রীরামচন্দ্রের পুজোর উপর জোর দিয়েছিলেন বিবেকানন্দ, কী বলেছিলেন?
    আজ তক | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • শ্রীরামচন্দ্রের পুজো ও রামনবমী পালন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের মধ্যে নানা মত রয়েছে। কেউ বলেন, রামের পুজো এখন বেশি করে হচ্ছে। আগে এত হত না। 
    রামপুজো বাংলার সংস্কৃতির নতুন আমদানি। আবার আর এক দলের মতে, রামপুজো এই বাংলায় বরাবর হয়ে এসেছে। এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। রাম উত্তরভারতের মতোই এই বাংলাতেও সমান জনপ্রিয়। 

    বীরসন্ন্যাসী বিবেকানন্দ এটা নিয়ে কী বলেছিলেন? স্বামী বিবেকানন্দ কিন্তু রামচন্দ্রের পুজোর পক্ষপাতি ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন ঘরে ঘরে রাম পুজো হোক। রামের পুজো-কে তিনি শক্তির আরাধনা হিসেবেই দেখতেন। সেই সূত্রেই তিনি চাইতেন, রামপুজো সর্বত্র হোক। বাংলাতেও ঘরে ঘরে হোক। 

    এক শিষ্যের সঙ্গে কথোপকথনে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, 'দেশে শ্রীরামচন্দ্রের পুজো চালিয়ে দে দিকি। বৃন্দাবনের লীলা-ফিলা এখন রেখে দে।' তারপরই স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন,'গীতা সিংহনাদকারী শ্রীকৃষ্ণের পুজো চালা। শক্তিপুজো চালা।' 

    স্বামি বিবেকানন্দের এই সব এক শিষ্যকে উপদেশ হিসেবে দিয়েছিলেন। আসলে দেশে বিভিন্ন ধর্মের বিভেদ, ভগবান নিয়ে বিভাজন, ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বাস, মত পার্থক্য, লাঠালাঠি, হানাহানি নিয়ে এক শিষ্য প্রশ্ন করেছিলেন বিবেকানন্দকে। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন, রামচন্দ্রের মতো মহাপুরুষের পুজো ঘরে ঘরে হওয়া দরকার। তাহলে মানুষ সত্যের উপলব্ধী করতে পারবে। 

    স্বামীজিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভারতবর্ষে এত সাম্প্রদায়িকভাব প্রবল কেন, কেনই বা এত হানাহানি? উত্তরে বিবেকানন্দ বলেছিলেন, 'গৌণভাবে নিয়ে অর্থাৎ মানুষ যে ভাব নিয়ে জ্ঞান অর্জন করতে অগ্রসর হয়, সেগুলো নিয়ে লাঠালাঠি শুরু হয়।' বিবেকানন্দ সাফ জানিয়েছিলেন, দেশে এত বিভাজনের মূল কারণ  একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ, বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব। তবে এটা শুধু ভারতের নয়, গোটা পৃথিবীতেই হয়ে এসেছে। 

    এর থেকে মুক্তির পথ খুঁজে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথও বাতলে দিয়েছিলেন বিবেকানন্দ। তিনি জানিয়েছিলেন, আগাছাগুলোকে সাফ করতে হবে। মানুষের মধ্যে শ্রদ্ধাভাব জাগিয়ে আনতে হবে। তবেই ঠিক তত্বগুলো পাওয়া যাবে। আগাছা সাফ করে সঠিক তত্ত্ব তুলে ধরলেই মানুষ শক্তিশালী হবে, দেশ গড়ে উঠবে। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে বিবেকানন্দ বলেছিলেন, 'মহাপুরুষদের পূজা চালাতে হবে। যাঁরা এই দেশে সনাতন তত্ত্ব প্রচার করে গেছেন তাঁদের কথা প্রচার করতে হবে। তাঁদের ইষ্ট দেব রূপে খাড়া করতে হবে। যেমন ভারতবর্ষে শ্রীরামচন্দ্র, শ্রীরামকৃষ্ণ,  মহাবীরের পূজা চালিয়ে দে দিকি। বৃন্দাবন লীলা ফিলা এখন রেখে দে দিকি। গীতা-সিংহনাদকারী শ্রীকৃষ্ণের পূজা চালা। শক্তিপুজো চালা।'    
     

     
  • Link to this news (আজ তক)