এই সময়, বোলপুর: দোতলায় অপারেশন থিয়েটার। সেখানেও ঠাঁই নিয়েছে বিষধর চিতি সাপ! বুধবার রাতে বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এই ঘটনায় আতঙ্কিত স্বাস্থ্যকর্মীরা। জানা গিয়েছে, এ দিন রাতে এক রোগীর জরুরি অপারেশনের জন্য হাসপাতালের ওটিতে ঢুকছিলেন শল্যচিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। দরজা খুলে তিনি ভিতরে ঢুকে দেখেন, অপারেশন থিয়েটারের মেঝেতে কুণ্ডলী পাকিয়ে রয়েছে সাপ।ডাক্তার ও নার্সদের চিৎকারে ততক্ষণে সে নড়েচড়ে উঠেছে। আঁতকে উঠে লোকজনকে ডাকাডাকি শুরু করেন সকলে। স্বাস্থ্যকর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে আসেন ওটিতে। তাঁরাও হতবাক হয়ে যান সাপটিকে দেখে। তড়িঘড়ি হাসপাতালের এক কর্মী সাড়ে তিন ফুট লম্বা চিতি সাপটিকে ধরে একটি বস্তায় ঢুকিয়ে বাইরে নিয়ে যান।
তবে অপারেশন থিয়েটারে সাপের উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই মর্মে হাসপাতালের সুপার ও বীরভূম জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখ খোলেননি।
বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, ‘খুবই ভয়াবহ ঘটনা। শুধুমাত্র চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নয়, রোগীদের জন্যও ভয়ের ব্যপার৷ ভাবুন তো, গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন করছি সেই সময়ে পায়ের নীচে বিষধর সাপ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। সমস্ত বিষয়টি হাসপাতালের সুপার, সিএমওএইচ কে জানানো হয়েছে।’
হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয় সনাতন বৈরাগ্য বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা খুবই আতঙ্কিত। অনেক সময়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে নীচেই বেড পেতে রোগীদের চিকিৎসা করা হয়। সেক্ষেত্রে যে কোনও সময় অনেক কিছুই হতে পারে। মুমূর্ষু রোগীদের অপারেশনের সময়ে যদি সেখানে সাপ ঘুরে বেড়ায় তা হলে রোগী, নার্স ও চিকিৎসকের অবস্থা কেমন হতে পারে একবার বুঝুন।’
এই হাসপাতালে ইঁদুরের উৎপাত বহুদিনের। সম্ভবত ইঁদুর শিকার করতে ওটিতে হাজির হয়েছিল সাপটি। বোলপুর মহকুমা ছাড়াও বর্ধমান জেলার আউসগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট প্রভৃতি এলাকার মানুষের ভরসা বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। সব বিভাগ মিলিয়ে প্রায় ৮০০ সিটের হাসপাতাল।