Gaza Israel War : ত্রাণ শিবিরও গুড়িয়ে দিয়ে ইসরাইলের লক্ষ্য রাফায়
এই সময় | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: ইজ়রায়েলকে থামাতে পারছে না কেউ-ই। প্রতি দিনই নেতানিয়াহু-র সেনা চালিয়ে যাচ্ছে নৃশংস হত্যালীলা। গত ২৪ ঘণ্টায় তারা গাজ়ার নুসেরিয়াত ত্রাণ শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭১ জন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও মহিলা। এ দিন আবার আল-শিফা হাসপাতাল থেকে ৩০টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সম্প্রতি ইজ়রায়েলি সেনা ওই হাসপাতলকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে চলে গিয়েছিল।ইজ়রায়েলের 'জেনোসাইড' যে মাত্রায় পৌঁছেছে, তাতে বৃহস্পতিবার ফের একবার প্রবল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেস। এ দিন গাজ়া নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য-রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার সময়ে তিনি বলেন, 'ইজ়রায়েল সব রকম মানবিক কোমল অনুভূতি হারিয়েছে। তারা একটা ছোট্ট ভূখণ্ডকে নরকে পরিণত করেছে। যাঁদের খাবার, জল, চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল, তাঁদের জন্য কিছুই করেনি ইজ়রায়েল।'
ইজ়রায়েলের তাণ্ডব ও টার্গেটেড স্পট দেখে American Near East Refugee Aid-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও শ্যন ক্যারোল বলেন, 'ইজ়রায়েল তো গাজ়ার শিক্ষা ব্যবস্থার 'scholasticide' করে ছেড়েছে। পুরো সিস্টেমটা থমকে গেছে। গাজ়ার প্রায় ৯৮ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত, যা তাঁদের বহু বছরের ঐতিহ্য। এখন তারা স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি ধ্বংস করে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে শিক্ষার আলোর সংস্পর্শে আসতে দিতে চাইছে না।'
এ দিকে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে চিন বলেছে, এই মুহূর্তে ইজ়রায়েলকে রাফাহ আক্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। রাশিয়া জানিয়েছে, প্যালেস্তাইনকে রাষ্ট্রপুঞ্জের পূর্ণ সদস্যপদ দিক তারা চায়। ইজ়রায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৪০০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গাজ়া উপত্যকায় যে গতি ও মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে তা বিস্ময়কর বলেও মন্তব্য করেছেন ইউনিসেফের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর ক্যাথরিন রাসেল। তিনি বলেছেন, গাজ়া উপত্যকার শিশুরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাজায় ইজ়রায়েলি হামলায় ৩৪ হাজারের বেশি প্যালেস্তাইনবাসীর মৃত্যু হয়েছে এবং ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। প্রায় ৮ হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁরা ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন এবং তাঁদের বের করার চেষ্টা এখনও চলছে। গাজা যুদ্ধে মৃত ও আহতদের ৭৩ শতাংশই নারী ও শিশু।
এর পাশাপাশি হুথি-রা এ দিন হুমকি দিয়েছে নেতানিয়াহুর দেশকে। তারা স্পষ্ট জানিয়েছে, ইজ়রায়েলি সেনা যে হত্যালীলা চালিয়ে যাচ্ছে, তার কোনও ক্ষমা নেই। তারা ওই দেশকে আক্রমণ করবে। ইরান আগেই বলেছিল, ইজ়রায়েল পাল্টা আঘাত করলে 'ফল ভুগতে' হবে। ফলে, পশ্চিম এশিয়ার এই মানবিক বিপর্যয় এখন গোটা বিশ্বের কাছে পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।