• Supreme Court : 'ভোট প্রক্রিয়ায় পবিত্রতা জরুরি'
    এই সময় | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: দু'দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল, যদি কোনওভাবে ইভিএমে জালিয়াতি হয়ও, তাহলেও কি সাজার কোনও বিধান আছে? আর বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, 'যে কোনওভাবেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। কেউ যেন এমন আশঙ্কা প্রকাশ করতে না-পারেন যে, যা করণীয় ছিল তা করা হচ্ছে না।'নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার জন্য সমস্ত বুথে সব ভিভিপ্যাট স্লিপ গণনা করতে হবে-এই আর্জি জানিয়ে দায়ের হওয়া একগুচ্ছ মামলার শুনানি করছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এরমধ্যে নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এডিআর-এর তরফেও একটি আবেদন রয়েছে। মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী নিজাম পাশা এদিন সওয়াল করেন, ভোটদাতাদের ভিভিপ্যাট স্লিপ হাতে পাওয়া এবং তা ব্যালট বাক্সে জমা দেওয়ার অধিকার থাকা উচিত।

    তখন বিচারপতি খান্না প্রশ্ন করেন, এটা কি ভোটারের গোপনীয়তাকে প্রভাবিত করবে না? পাশার জবাব, 'ভোটারের অধিকারকে খর্ব করতে ভোটারের গোপনীয়তার যুক্তিকে হাতিয়ার করা উচিত নয়।' আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের যুক্তি ছিল, ভিভিপ্যাট মেশিনের আলো সব সময়ে জ্বলে থাকা উচিত যাতে স্লিপটি কেটে কাচের বাক্সে পড়া পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়াটি ভোটার দেখতে পান। তাহলে ভোটারের গোপনীয়তাও খর্ব হবে না।

    বর্তমানে ওই আলো সাত সেকেন্ডের বেশি জ্বলে না। আর এক আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ের যুক্তি ভোটগণনা প্রক্রিয়া যাতে আরও নির্ভুল ও স্বচ্ছ করার জন্য আলাদা করে অডিটের দাবি জানান। শুনানি চলাকালীন প্রশান্ত ভূষণ কেরালায় একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মক পোলের উদাহরণ দেন। তাঁর যুক্তি, রিপোর্ট অনুযায়ী সেখানে বিজেপির পক্ষে বাড়তি ভোট রেকর্ড হয়েছিল। আদালত এর ব্যাখ্যা চাইলে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী মনিন্দর সিং জানান, ওই রিপোর্টটি ঠিক নয়।

    কমিশনের তরফে জানানো হয়, সব ভোটযন্ত্রই মক পোল পদ্ধতির মাধ্যমে দেখা হয়। প্রার্থীদের র‍্যান্ডমলি পাঁচ শতাংশ মেশিন বাছাই করতে বলা হয়। একই পদ্ধতি ভোটের দিনও মেনে চলে কমিশন। সেখানে ভিভিপ্যাট স্লিপ বের করে তা গোনা ও মিলিয়ে দেখা হয়। প্রতিটি মেশিনে আলাদা আলাদা পেপার সিল থাকে এবং গণনার আগে সিল নম্বর খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা আছে। আদালত জানতে চায়, একজন ভোটার কীভাবে জানতে পারবেন, তাঁর ভোটটা ঠিকঠাক পড়ল কি না।

    ভোট দেওয়ার পরে ভোটাদাতা স্লিপ পেতে পারেন কি না এবং ভিভিপ্যাট পেপার স্লিপ গণনায় কেন বেশি সময় লাগে। কমিশন জানায়, এই স্লিপ অত্যন্ত পাতলা এবং গায়ে গায়ে আটকে থাকায় গণনার পক্ষে অসুবিধাজনক। এবং সেটা গণনা করার জন্য নয়ও। বেঞ্চ এখানে বিশ্বাসযোগ্যতার প্রসঙ্গ তোলে। কমিশনের আইনজীবীকে আদালত বলে, 'আপনারা আমাদের যা বলছেন এবং সাধারণ মানুষের সামনে যা আছে, দু'টোর মধ্যে কিছু ফারাক থেকে যাচ্ছে। এই ব্যবধানটা পূরণ করা প্রয়োজন।'

    বেঞ্চের আরও বক্তব্য, 'ভোটারদের বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করা উচিত। আমরা কীভাবে গোটা প্রক্রিয়াটার বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে পারি?' কমিশন এই ব্যাপারে আগামিদিনে জানাবে বলে জানিয়েছে। যদিও মামলাকারীদের উদ্দেশে আদালত বলে, 'আপনাদের প্রতিটি টেকনিক্যাল বিষয় বোঝার তো প্রয়োজন নেই। কমিশন যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে, তাতে ভোটারদের সন্তুষ্ট হওয়া প্রয়োজন।' এদিন মামলার শুনানি শেষে আদালত রায়দান স্থগিত রেখেছে।
  • Link to this news (এই সময়)