জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তায় শিখরে। যত দিন যাচ্ছে ততই ইউজারের সংখ্যা বাড়ছে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সামাজিক পরিচিত বাড়িয়ে তুলতে চাইছেন। বহু উঠতি বা জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার আছেন যারা নিত্য নতুন মজাদার ভিডিয়ো, ছবি বা রিলসের মাধ্যমে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে থাকেন। যত বেশি লাইক-ভিউ, তত বেশি আয়। এই অর্থ উপার্জনের নেশায় সাইবার ক্রাইমের ফাঁদে পড়লেন এক মহিলা। ৩৪ বছর বয়সী এক মহিলা তাঁর এক বন্ধুর পোস্ট দেখেন। ওই পোস্টে সে কীভাবে ৭.৮০ লাখ টাকা আয় করেছে সে সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেওয়া ছিল। ওই পোস্টই যে ওই মহিলা সর্বনাশ ডেকে আনবে সে কখনই ভাবেননি। ওই পোস্টটি দেখার পর ভুক্তভোগীকে একটি টেলিগ্রাম আইডিতে যোগাযোগ করতে বলা হয়। স্ক্যামার তাঁকে ফরেক্স ট্রেডিংয়ে লাভজনক রিটার্নের জন্য ২.৪০ লাখ টাকা দিতে প্ররোচিত করে।
তারপরে যদিও ভুক্তভোগী মহিলা তাঁর টাকা পায়নি। তখনই সে বন্ধুকে ফোন করে। জানতে পারে যে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ভুক্তভোগী মহিলা কুরলার কুরেশি নগরের বাসিন্দা। ১৮ মার্চ ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকেই ওই মহিলা তাঁর বন্ধুর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল দেখে। উল্লিখিত প্রোফাইলে একটি পোস্ট ছিল যেখানে বলা হয়েছে যে ১৭ মার্চ তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭.৮০ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে। তাঁর ওই পোস্ট দেখে কমেন্টের বন্যা বয়ে যায়। বহু ইউজারদের আরও জানতে তাঁকে মেসেজ করতে বলা হয়। সেই দেখেই ভুক্তভোগী মহিলা তাঁকে মেসেজ করেন। স্ক্যামারকে জিজ্ঞাসা করেন যে কীভাবে সে এত টাকা উপার্জন করল। ওই ব্যক্তি তখন তাঁকে অন্য একটি ইনস্টাগ্রাম আইডির রেফারেন্স দেয় এবং ভিকটিমকে সেই আইডিতে যোগাযোগ করতে বলে। ভিকটিমটি তখন উক্ত ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যিনি তাঁকে টেলিগ্রাম ইউজারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। যিনি ফলস্বরূপ তাঁকে ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য গাইড করার আশ্বাস দেন। প্রতারক তাঁকে বলেন যে তিনি যদি ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন তবে তিনি ৮ লাখ টাকা উপার্জনের অধিকারী হবেন। তার কথামত সে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করেন। এবং একটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য একটি লিঙ্ক শেয়ার করেছিলেন।উল্লিখিত নির্দেশাবলী অনুসরণ করেন ওই মহিলা। ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করার পরে, তিনি উক্ত ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে তাঁর উপার্জন দেখতে পাবেন। যাইহোক, যখন ভুক্তভোগী তার উপার্জন তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তখন সে তা করতে পারেনি। তারপরে তাঁকে তার উপার্জন মুক্তি পাওয়ার জন্য আরও টাকা দিতে বলা হয়েছিল। ভুক্তভোগী ২.৪০ লক্ষ টাকা আরও দেন এবং যখন সে তাঁর টাকা পায়নি, তখন সে তার বন্ধুকে ফোন করে এবং কেউ তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছে জেনে হতবাক হয়ে যায়।এরপরই তিনি পুলিসের দ্বারস্থ হন। বৃহস্পতিবার এবিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিস তথ্যের উপর ভিত্তি করে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪১৯(ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে প্রতারণা), ৪২০ (প্রতারণা এবং অসাধুভাবে সম্পত্তি সরবরাহ করা) এবং ৬৬সি (পরিচয় চুরি), ৬৬ডি (কম্পিউটার সংস্থান ব্যবহার করে ব্যক্তিত্ব দ্বারা প্রতারণা) এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছে।