১৯-এর তুলনায় ২৪-এর প্রথম দফায় কমল ভোটের হার, NDA না INDIA, কার বেশি ফায়দা?
এই সময় | ২০ এপ্রিল ২০২৪
১৮তম সাধারণ নির্বাচন শুরু হয়ে গিয়েছে দেশে। ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে লোকসভা ভোটের প্রথম পর্ব। ২১টি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের মোট ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে শুক্রবার। পশ্চিমবঙ্গ এবং মণিপুর থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা শোনা গেলেও মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই মিটেছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবের রাউন্ড-১।ভোট শেষে বিজয় মিছিল করতে দেখা যায় বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। সেখানে তিন কেন্দ্রে ভোটের হার ৭৭.৫৭ শতাংশ। অন্যদিকে, মণিপুরে কুকিরা ভোট বয়কট করলেও সেখানেও ৬৮.৬২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
BJP নেতৃত্বাধীন NDA জোট তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া। প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার জন্যও সম্পূর্ণ আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে, ইন্ডিয়া জোটও পাশা পালটে দিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। তবে প্রথম দিনের ভোটদানের হার কি ২০১৯ সালের রেকর্ড ভাঙতে পারল?
গোটা দেশে শুক্রবারের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৬২.৩৭ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ৮০.১৭ শতাংশ ভোট পড়েছে ত্রিপুরায়। যা প্রথম দফার ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে সর্বাধিক। সবচেয়ে কম ভোটদানের হার বিহারে। সেখানে ভোট পড়েছে ৪৮.৫ শতাংশ।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ভোটদাতাদের উৎসাহ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তীব্র গরম সত্ত্বেও বুথে বুথে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখে তিনি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন। ভারতের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক উৎসবে বিপুল সংখ্যক মানুষকে অংশ নিতে দেখে প্রশংসা করেন তিনি। তবে তথ্য পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রথম দফায় ভোটের হার ছিল ৬৯.৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ বিগত লোকসভার তুলনায় চলতি বছর ভোটের হার প্রথম পর্বে কিছুটা হলেও কমল। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দু'ধরণের পরিস্থিতির সমীকরণ কষছেন।
ভোটের হার কমায় বদলে যায় সরকারগত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে পাঁচটিতে ভোটদানের হার কম দেখা গিয়েছে। যে কয়েকবার ভোটদানের হার কম হয়েছে তার মধ্যে চারবার সরকার বদলে গিয়েছে। আবার একবার শাসকদলই ক্ষমতায় ফিরেছে। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে ভোটদানের হার কম হওয়ায় জনতা পার্টির সরকারের পতন হয়। তার বদলে কংগ্রেস সরকারি তৈরি করে। আবার ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে ভোটদানের হার পড়ে যাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল কংগ্রেস। বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার তৈরি হয়। ১৯৯১ সালে আরও একবার ভোটদানের হার পড়ে যায়। কেন্দ্রে কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় বসে। ১৯৯৯ সালে ভোটের হার কম হওয়া সত্ত্বেও পরিবর্তন হয়নি। ২০০৪ সালেও ভোটের হার অন্যান্য বারের তুলনায় কম ছিল। ফয়দা তোলে বিরোধী পক্ষ।
ভোটদানের হার কম হওয়ায় ফায়দে লোটে শাসকদলআবার কোনও কোনও সময় ভোটের হার কম হওয়ায় ইঙ্গিত মিলেছে জনগণ ক্ষমতার হস্তান্তর চায় না। একাধিক রাজ্যের নির্বাচনে দেখা গিয়েছে বহুবার বিপুল সংখ্যক ভোটের হার থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের পরিবর্তন ঘটাতেই যে সর্বদা বিপুল হারে ভোট পড়ে তেমনটা নয়। মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। কম ভোটদানের ফায়দা তোলে শাসকদলেরা।