Israel Hamas War : ইউএনে প্যালেস্টাইনের এন্ট্রি আটকে দিল ইউএস
এই সময় | ২১ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: ইরানের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই গাজ়ায় আক্রমণ জারি রাখল ইজ়রায়েল। এখন তাদের নিশানায় রাফা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ইজ়রায়েলি হামলায় ৪২ জন নিহত হয়েছে বলে খবর, আহত অন্তত ৬৩। রাফা এবং সংলগ্ন এলাকার চাষের জমি তছনছ করে দিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। এই আক্রমণের আবহেই বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জেও বড়সড় ধাক্কা প্যালেস্তিনীয়দের।প্যালেস্তাইনকে রাষ্ট্রপুঞ্জের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ হয়েছিল নিরাপত্তা পরিষদে, আমেরিকার ভেটোয় পাশ হলো না সেই প্রস্তাব। আলজেরিয়ার পেশ করা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১২টি দেশ। ভোটদানে বিরত থেকেছে ব্রিটেন এবং সুইৎজ়ারল্যান্ড।
রাষ্ট্রপুঞ্জের পূর্ণ সদস্যের মর্যাদা দেওয়ার অর্থ প্যালেস্তাইনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। ইজ়রায়েলের বন্ধুরাষ্ট্র আমেরিকা প্যালেস্তাইনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চাইবে না, এটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু ইউএসের এই পদক্ষেপ নানা মহলে সমালোচিত হয়েছে। প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আব্বাসের মতে, 'ইউএসের ভেটো আগ্রাসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ভেটো প্যালেস্তাইনকে অন্ধকারে ঠেলে দিল।'
রাষ্ট্রপুঞ্জে প্যালেস্তাইনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুরের অবশ্য দাবি, 'আমেরিকার বাধায় প্রস্তাব পাশ আটকে গেলেও আমাদের আশা, প্রত্যয়কে ধ্বংস করা যাবে না। প্যালেস্তাইনের রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।' প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসও আমেরিকার পদক্ষেপের কড়া নিন্দা করেছে। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক মঞ্চ প্যালেস্তাইনকে পূর্ণ রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়ার পক্ষপাতী, আমেরিকাই তাতে বাধা দিচ্ছে।
আমেরিকার বাধা পেরিয়ে প্যালেস্তিনীয়দের লড়াই এবং আত্মমর্যাদার অধিকারকে মান্যতা দিক আন্তর্জাতিক মহল। কাতার, মিশরের মতো একাধিক দেশ আমেরিকার পদক্ষেপের নিন্দা করেছে। তাদের মতে, আমেরিকার এই পদক্ষেপ ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার রাস্তা প্রায় বন্ধ করে দিল। তুরস্কের আবার বক্তব্য, 'সকলে যখন প্যালেস্তাইনের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তখন আমেরিকা আচমকা ইজ়রায়েলকে সমর্থনের রাস্তা বেছে নিল। অবশ্য তাদের থেকে অন্যরকম প্রত্যাশাও ছিল না।'
ইজ়রায়েল অবশ্য বন্ধুরাষ্ট্র আমেরিকার এই পদক্ষেপে খুবই খুশি। ইজ়রায়েলের বিদেশমন্ত্রী ইজ়রায়েল কাৎজ়ের মতে, প্যালেস্তাইনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাবটাই লজ্জাজনক। ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলের বুকে নৃশংস হামলার পর কেন কেউ হামাসের নিন্দা না করে প্যালেস্তাইনের পাশে দাঁড়াচ্ছে, প্রশ্ন কাৎজ়ের।
আমেরিকাও অবশ্য তাদের ভেটোর পক্ষে যুক্তি সাজিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জে ইউএসের ডেপুটি অ্যাম্বাসাডর রবার্ট উডের বক্তব্য, 'ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাত স্থায়ীভাবে মেটানোর জন্য প্যালেস্তাইনকে পৃথক রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়া প্রয়োজন, সেটা আমেরিকাও মানে, সমর্থনও করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও একাধিকবার বলেছেন, ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাত মেটাতে দুই রাষ্ট্র সমাধানই ভরসা।
কিন্তু প্যালেস্তাইন কি সত্যিই পৃথক রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করেছে? রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করার কথা আমরা প্যালেস্তিনীয় অথরিটিকে বহুবার বলেছি। কিন্তু ওরা শোনেনি। উল্টে হামাসের মতো একটা জঙ্গি সংগঠন প্যালেস্তাইনের মাটিতে বসে পেশিশক্তির আস্ফালন দেখাচ্ছে, গাজ়ায় প্রভাব খাটাচ্ছে!'
রাশিয়ার অবশ্য দাবি, আমেরিকা শুধু ইজ়রায়েলের স্বার্থই দেখছে। প্যালেস্তিনীয়দের নিজস্ব রাষ্ট্র দেওয়ার কোনও ইচ্ছেই আমেরিকার নেই!