Summer 2024 : ৪২ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই পারদ! ভয়ংকর লু থেকেও মুক্তি নেই, চলতি বছর কেন ঘন ঘন হিটওয়েভ?
এই সময় | ২১ এপ্রিল ২০২৪
অন্তিম লগ্নে এসে পৌঁছে গিয়েছে এপ্রিল মাস। কিন্তু, তা বলে মোটেই গরম থেকে এখন রেহাই মিলবে না। এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশেই ঘোরাফেরা করবে। হিটওয়েভও জারি থাকবে রাজ্যে রাজ্যে। জানেন কি এ বছর কেন এত গরম পড়ছে? কেন বইবে ভয়ংকর লু?আইপিসিসি ব্যাঙ্কিং গ্রুপের সহ অধ্যক্ষ এবং আইপিএসএল প্যারিসের বরিষ্ঠ জলবায়ু বিজ্ঞানী রবার্ট বাওটার্ড টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে হিটওয়েভ পরিস্থিতি নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার দেন।
ভারতে এপ্রিল মাসে কেন এই ভয়ংকর গরম?জলবায়ু বিজ্ঞানী রবার্ট বাওটার্ড বলেন, 'হিটওয়েভের অন্যতম কারণ অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েকমাস ধরে ভারতে বাড়তে থাকা গরম নিয়ে ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের সঙ্গে বিস্তারিত গবেষণা চালিয়েছি। দেখা গিয়েছে, ২০২২ সালের মার্চ থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত ভারতের মারাত্মক গরম পড়েছিল। সে সময় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি ছিল। গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বাড়ার জন্য এ হেন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। গত বছর পূর্ব ভারতে সর্বাধিক গরম পড়েছিল। দেশের মানুষের শারীরে অধিক তাপমাত্রার গরম সহ্য করার ক্ষমতাও বেড়ে গিয়েছে। যা হিট স্ট্রেস ইনডেক্স দিয়ে চিহ্নিত হয়। এই সীমা ভয়ংকর মাত্রা পেরিয়ে গিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ৩০ গুণ বেড়ে গিয়েছে এই ইনডেক্স।'
ভারতে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি কি আদৌ স্বাভাবিক?ইউরোপেও তাপমাত্রা হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতেও গত কয়েক বছরের সার্বিকভাবে তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে রবার্ট বাওটার্ড বলেন, 'বিজ্ঞান রাজনীতি দিয়ে চলে না। তথ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করে চলে। নানাবিধ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে ভারতে হিটওয়েভ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। হ্যাঁ, এটা ঠিক ভারত বরাবরই গরমপ্রধান দেশ। তবে এটাও সত্যি এখন তাপমাত্রা আরও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।'
কতটা ভয়ংকর এই হিটেওয়েভ?হিটেওয়েভের জেরে মানুষের স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। শুষ্ক আবহাওয়ার এবং আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তির কারণে শরীর থেকে ঘাম ঝরা বন্ধ হয়ে যায়। যা মারাত্মক ক্ষতি করে। হিটওয়েভের সময় ঠান্ডা জায়গায় থাকা অত্যন্ত জরুরি। তবে এও ঠিক সকলের পক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ব্যবহার করার ক্ষমতা থাকে না। এই পরিস্থিতিতে বাইরে বেরিয়ে কাজ করা ভয়ংকর হতে পারে। ফলে লু-এর সময়টুকু এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন জলবায়ু বিজ্ঞানী রবার্ট বাওটার্ড।
হিটওয়েভ থেকে বাঁচার উপায় কী?বাইরে বেরোলে সঙ্গে জলের বোতল অবশ্যই রাখুন। সুযোগ পেলেই ছায়ায় দাঁড়ান।হালকা সুতির পোশাক পরুন। রোদে সানগ্লাস, ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন। সহজপাচ্য খাবার খান। ডাল, ঝোলের মতো তরল খাবার খান। ডাবের জল, ঘোল, লস্যি খান কোল্ডড্রিংকের বদলে।স্কার্ফ দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন লু থেকে বাঁচতে।রোদ লেগে জ্বর এলে প্যারাসিটামল/অ্যাসপিরিন নয়। শরীরের তাপমাত্রা কমাতে হবে জল, বরফ, পাখা ইত্যাদির সাহায্যে।