• প্রতিদিন ১২টি ডিম খেলেও বাড়ে না কোলেস্টেরল! গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • সপ্তাহে ১২ বা তার বেশি ডিম খেয়েও কোলেস্টেরলের মাত্রা একইরকম থাকে, একটুও খারাপ প্রভাব ফেলে না। একটি নতুন সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফল বলছে যে যাঁরা ডিম খাননি, তাঁদের মতো একই মাত্রায় কোলেস্টেরল ছিল যাঁরা খেয়েছেন তাঁদের শরীরেও। জর্জিয়ার আটলান্টায় আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজির বার্ষিক বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। গবেষণায় ১৪০ জন অংশগ্রহণকারীর ডেটা দেখে গবেষণাটি বুঝেছে যে ডিম মানবদেহে সেইভাবে ক্ষতিকারক নয়। অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে বা হার্টের স্বাস্থ্য খারাপ করার জন্য ডিমকে দায়ী করেন। তবে নতুন গবেষণাটি কিছুটা আশ্বস্ত করতে পারে যে ডিম খাওয়া উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জন্যও সঠিক হতে পারে।

    আসলে, ভুল খাদ্যাভ্যাস এবং দুর্বল জীবনযাত্রার কারণে মানুষের মধ্যে কোলেস্টেরলের সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। আসলে, আমাদের শরীরে দুই ধরনের কোলেস্টেরল রয়েছে, প্রথমটি হল ভালো কোলেস্টেরল এবং দ্বিতীয়টি খারাপ কোলেস্টেরল। শরীরে সুস্থ কোষ গঠনের জন্য ভালো কোলেস্টেরল প্রয়োজন। সেইসঙ্গে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা শিরায় জমে ব্লকেজ তৈরি করতে পারে। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। উচ্চ কোলেস্টেরল কমাতে আপনার খাদ্যের বিশেষ যত্নও নিতে হবে। তাই এইসব মানুষের প্রায়ই প্রশ্ন থাকে যে হাই কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়া উচিত নাকি?

    ডিম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন-বি১২, আয়রন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফোলেট এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাই প্রতিদিন ডিম খেলে অনেক স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায়। তবে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় ডিম না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। উচ্চ কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার বিষয়ে বেশিরভাগ প্রায়শই বিভ্রান্ত থাকেন। তবে, ডায়েটিশিয়ানদের মতে, উচ্চ কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রে সুষম পরিমাণে ডিম খাওয়া নিরাপদ। সাম্প্রতিক গবেষণায়ও দেখা গিয়েছে যে ডিম খাওয়ার কোলেস্টেরলের মাত্রার উপর সামান্য প্রভাবও নেই। একই সঙ্গে কিছু গবেষণায় এটাও দেখা গিয়েছে যে ডিমে ভালো কোলেস্টেরল থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যতই হোক, এটি কিন্তু সীমিত পরিমাণেই খাওয়া উচিত অন্যথায় সমস্যা বাড়তে পারে।

    ১৪০ জন অংশগ্রহণকারীকে দু'টি গ্রুপে ভাগ করেছিলেন গবেষকরা - ফোর্টিফাইড এগ গ্রুপ, যারা সপ্তাহে ১২ বা তার বেশি ফোর্টিফাইড ডিম খায় এবং ডিম-বিহীন ডায়েট গ্রুপ, যারা প্রতি সপ্তাহে ২ বা তার কম ডিম খায়। অংশগ্রহণকারীদের পছন্দ অনুযায়ী ডিম রান্না করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের সকলের বয়স ৫০ বছরের বেশি ছিল এবং কমপক্ষে দু'টি কার্ডিয়োভাসকুলার ঝুঁকির কারণ ছিল তাঁদের শরীরে। অংশগ্রহণকারীদের ২৪ শতাংশের ডায়াবেটিস ছিল।

    তাঁদের চার মাস ধরে ফলো-আপ করে দেখা গিয়েছিল যে এইচডিএল এবং এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা একই ছিল। এর থেকেই বোঝা গিয়েছিল প্রতি সপ্তাহে ১২ বা তার বেশি ডিম খাওয়া রক্তের কোলেস্টেরলের উপর কোনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না।

    ডায়েটিশিয়ানদের মতে, উচ্চ কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশ খাওয়া যেতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি এবং প্রোটিন পাওয়া যায়। তবে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে ডিম খাওয়ার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রতিদিন ১ থেকে ২টির বেশি ডিম খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও, তেল বা মাখনে ডিম ভাজার পরিবর্তে সেদ্ধ করে খান। যদি হৃদরোগ বা অন্য কোনও গুরুতর সমস্যা থাকে, তাহলে ডিম খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)