• বয়স ১০৪, তবু লাইনে দাঁড়িয়েই ভোটদানের ইচ্ছা রানিবালার
    এই সময় | ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • হাতে পায়ের জোর কমেছে বয়সের ভারে। পাল্লা দিয়ে কমেছে চোখের দৃষ্টিশক্তিও। তবুও বাড়িতে বসে নয়, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েই ভোট দেওয়ার ইচ্ছা ১০৪ বছরের বৃদ্ধার। গণতন্ত্রের উৎসবে লাঠি হাতে কেন্দ্রে গিয়েই দেবেন ভোট দেবেন বলে দাবি আমডাঙার মরিচার বাসিন্দা রানিবালা সরকারের। বর্তমানে তাঁর বয়স ১০৪ বছর। তবুও তিনি বলেন, 'আমি নিজেই ভোট দিতে যাব, লাঠি হাতে।কথা বলে জানা যায়, স্বামী নরেন সরকার মারা গিয়েছেন বহুবছর আগে। নরেন ও রানিবালার ছয় ছেলেমেয়ে। এক ছেলে মারা গিয়েছেন, আর একজন নিখোঁজ। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে বর্তমান। নয় জন নাতি, আর ছয় জন নাতনি নিয়ে রানিবালা সরকারের ভরা সংসার। আমডাঙার পশ্চিম মরিচা এলাকায় বড় মেয়ে বাসন্তী দাসের বাড়িতেই থাকেন তিনি। আর এখানেই দেন ভোট। ১০৪ বছর বয়স, তাই বয়সজনীত কারণে কানেও অনেকটা কম শোনেন। কাছে গিয়ে জোরে কথা বললে তবেই শুনতে পান। তবে রোগভোগ খুব একটা নেই বলেই জানালেন পরিবারের সদস্যরা। স্বাভাবিক ভাবেই খাওয়াদাওয়াও করেন রানিবালা সরকার। প্রতি সন্ধ্যায় নিয়ম করে টিভিতে বাংলা সিরিয়ালও দেখেন। তবে লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারেন না। রাজ্য সরকারের তরফে বিধবা ভাতা পান।

    বড় মেয়ের বাড়িতে থাকেন রানিবালা সরকার

    ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে 'সেঞ্চুরি'র দোরগোড়ায় ছিলেন রানিবালা। তখন বসয় ছিল ৯৯। সেই সময় কিছু সমস্যার জন্য ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যেতে পারেন নি। নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপে বাড়িতে বসেই ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর গত বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়েই। শতবর্ষ পার করে এবারই তার প্রথম লোকসভার ভোট। তাই বাড়ির পাশে মরিচা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রানিবালা। সব রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাই ভোট চাইতে আসছেন তাঁর বাড়িতে।

    ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের ইচ্ছা রানিবালার

    অস্পষ্ট ভাষায় রানীবালা বলেন, 'গতবার লোকসভায় বাড়িতে বসেই ভোট দিয়েছি। এবার লাঠি হাতে ভোট দিতে যাব। বাড়িতে বসে আমি ভোট দেব না। মেয়ে জামাইকে সঙ্গে নিয়ে আমি ভোট দেব।' রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠতেই বৃদ্ধা জানান, "দিদি অনেক কাজ করেন শুনেছি। ওঁর সরকারি ভাতা আমি পাই।' কাকে ভোট দেবেন? এই প্রশ্ন শুনে দ্বিধাহীন জবাব, 'যাঁর নুন খাই তাঁরই গুণ গাইতে হবে।' এরপরই বড় মেয়ের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি ১০৪ বছরের রানিবালা সরকারের মুখে।

    বড় মেয়ে বাসন্তী দাস বলেন, 'এ তল্লাটে মায়ের বয়সী ভোটার নেই। মা এবার বুথে গিয়েই ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। আমি সঙ্গে যাব। ভোট দেওয়ার প্রতি মায়ের বড্ড ঝোঁক। আগের নির্বাচনগুলিতে লাঠি হাতে ভোট দিয়েছেন, আর এবারও দেবেন।' ভোটদানে উৎসাহ জোগাতে বৃদ্ধার এমন আগ্রহ নতুন ভোটারদেরও উদ্বুদ্ধ করবে বলেই মত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা জেলার ভোটকর্মীদের।
  • Link to this news (এই সময়)