• Calcutta High Court : দাদাকে ফিরে পেতে আদালতে বৃদ্ধ ভাই
    এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • অমিত চক্রবর্তী

    অশীতিপর দাদার খোঁজ পেতে বৃদ্ধ ভাই দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাইকোর্টের। সেই সূত্রে আদালতের নির্দেশে পুলিশ যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে চক্ষুচড়কগাছ আইনজীবীদেরও। পুলিশ জানিয়েছে, নিজেকে সমাজকর্মী পরিচয় দিয়ে অসুস্থ শ্বশুরকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছেন তাঁর পুত্রবধূ! এমনকী তিনি ছাড়া বৃদ্ধের কোনও আত্মীয়-স্বজন গেলে যাতে তাঁরা বৃদ্ধাশ্রমে ঢুকতে না পারেন, তেমন শর্তও জারি করেছেন বলে অভিযোগ।হাইকোর্টে মামলাকারী ভাইয়ের আবেদন, বৃদ্ধাশ্রম থেকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক দাদাকে। নিজেদের কাছে রেখেই অসুস্থ দাদার চিকিৎসা করাতে চান ভাই। প্রয়োজনে দাদার যা সম্পত্তি আছে, তা সব নিয়েও পুত্রবধূ শ্বশুরকে বৃদ্ধাবাস থেকে মুক্তি দিয়ে তাঁদের কাছে ফেরান, এমনই আর্জি মামলাকারীর।

    বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ প্রাথমিক শুনানির পর পুলিশের রিপোর্ট দেখে অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানিয়েছে, আগামী শুনানিতে অশীতিপর বৃদ্ধকে সরশুনার হোম থেকে যথাযথ ব্যবস্থা করে এজলাসে হাজির করাতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি, থানাকে নতুন করে রিপোর্ট দিতে হবে। ওই হোমের কর্তৃপক্ষকেও রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে, বৃদ্ধকে কে বা কারা সেখানে রেখে এসেছেন, সেখানে রাখার জন্যে কে বা কারা টাকা দিয়েছেন। অসুস্থ বৃদ্ধ সেখানে কী কী সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, তাও জানাতে হবে।

    এক সময়ের বনেদি একান্নবর্তী পরিবার বর্তমানে অনেকটাই ছন্নছাড়া। কলকাতা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। মামলাকারী বৃদ্ধ থাকেন এক বাড়িতে। তাঁর সেজদা থাকতেন দক্ষিণ শহরতলিতে। সেখানে একটি আবাসনে দু’টি ফ্লোরের একটিতে করোনার সময় থেকে মামলাকারীর সেজদাকে রাখা হতো। অন্য ফ্লোরে পরিবার নিয়ে থাকতেন তাঁর ছেলে। কিন্তু গত জানুয়ারিতে এক দুর্ঘটনায় তাঁর ছেলে মারা যান।

    তারই মধ্যে দাদার সঙ্গে নিয়মিত দেখাসাক্ষাৎ করতে যেতেন মামলাকারী ভাই। কিন্তু মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে সেখানে গিয়ে ভাই জানতে পারেন, দাদা সেখানে নেই। পুত্রবধূ কখনও বলেছেন, তিনি নিজে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন, কখনও বলেছেন, তাঁকে অন্য কেউ নিয়ে গিয়েছেন। এক-এক বার এক-এক রকম কথায় সন্দেহ হয় ভাইয়ের। তার পরেই তাঁর অন্য আত্মীয়রা বৃদ্ধের ছবি নিয়ে আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর শুরু করেন।

    বৃদ্ধাশ্রমে খোঁজ মেলে বৃদ্ধের। কিন্তু মামলাকারী ভাইকে প্রথমে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তার পরেই দাদাকে ফিরে পেতে হেবিয়াস কর্পাস মামলা করেন ভাই। সরশুনা থানায় অভিযোগ জানানোর পরে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর রিপোর্ট দেয় আদালতে।
  • Link to this news (এই সময়)