• গুজরাটে দুর্মূল্য গাধার দুধ, প্রতি লিটারের দাম ৫ থেকে ৭ হাজার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • গুজরাত, ২১ এপ্রিল: গুজরাটে দুর্মূল্য গাধার দুধ। লক্ষ লক্ষ টাকা কামাচ্ছেন এক গাধা পালনকারী। প্রতি লিটার গাধার দুধ পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা দরে বিক্রি করছেন ওই যুবক। শুনতে হাস্যকর লাগলেও এটাই বাস্তব। গুজরাতের ধীরেন সোলাঙ্কি নামে এক যুবক তাঁর খামারে ৪২টি গাধা পালন করছেন। যার দুধ বিক্রি করে মাসে তিনি প্রায় তিন লক্ষ টাকা করে রোজগার করছেন। এজন্য তিনি ভালোই পরিচিতি পেয়েছেন। কম বেতনের বেসরকারি চাকরি ছেড়ে গাধার দুধ বিক্রি করে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছেন ধীরেন।

    তিনি কিভাবে এলেন এই গাধার পেশায়? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সবিস্তারে খুলে বলেন তাঁর গাধা পোষার রহস্যের কথা। তিনি জানান, ‘সরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কোথাও কাজ পাচ্ছিলাম না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেই বেতনে আমার সংসার ঠিকমতো চলছিল না। সেজন্য বিকল্প পেশার কথা ভাবছিলাম। তখনই শুনলাম দক্ষিণ ভারতে গাধার দুধের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তখন নিজের গ্রামেই একটি গাধার খামার তৈরি করি। এজন্য কিছু লোকের সাহায্য নেওয়া হয়। প্রায় ২২ লক্ষ টাকা খরচ করে ২০ টি গাধা কিনি। এই নিয়োগের উদ্দেশ্য ছিল, খামারে পালন করা গাধার দুধ বিক্রি করে ব্যবসা বাড়ানো। সেই মতো মাত্র আট মাস আগে এই ব্যবসা শুরু করি। তবে গুজরাতে গাধার দুধের চাহিদা না থাকায় প্রথমে কোনও আয় ছিল না। তারপরে কর্ণাটক ও কেরলের কিছু কোম্পানির সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়। তারাই আমার থেকে এখন প্রতি মাসে লিটার লিটার দুধ কিনে যায়।’

    আর সেই দুধের দাম ও তাঁর বাজারদর শুনলে চোখ কপালে উঠে যাবে। ধীরেনের কথা অনুযায়ী, যেখানে গরুর দুধ বাজারে লিটার পিছু মাত্র ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে এক লিটার গাধার দুধের বাজার দাম ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।

    তবে এখানেই এই ব্যবসার শেষ নয়। তরল দুধের পাশাপাশি গাধা থেকে উৎপাদিত দুধ গুঁড়ো আকারে বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি লাভ হয় ধীরেনের। যার এক কেজির দাম এক লক্ষ টাকার ওপরে। ধীরেন এই দুধকে সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজারের ব্যবহার করেন।

    কিন্তু এত চাহিদা কেন গাধার দুধের? জানা গিয়েছে, গ্রীকের চিকিৎসক হিপ্পোক্রেটস লিভারের অসুখ, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, জ্বর নিরাময়ে গাধার দুধকে ওষুধ হিসাবে ব্যবহারের পথ দেখিয়েছিলেন। প্রাচীন যুগে স্বয়ং ইজিপ্টের রানি ক্লিওপেটরা ত্বক মসৃণ রাখার জন্য গাধার দুধ দিয়ে স্নান করতেন। সেজন্য গাধার এই মূল্যবান দুধ খাওয়ার কাজে নয়, মূল্যবান নানা প্রসাধনী দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সেই কারণেই বাজারে এই দুধের দাম এত অগ্নিমূল্য। ব্যবসার প্রসার ঘটাতে ধীরেন গাধার দুধ ও তার ব্যবহারের জন্য দেশের মানুষকে আকৃষ্ট করতে চান। পাশাপাশি, এই ব্যবসার মাধ্যমে দেশে বেকার সমস্যার সমাধানেও তিনি যথেষ্ট আশাবাদী।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)