আমেদাবাদ: কথিত আছে, রানি ক্লিওপেট্রা নাকি গাধার দুধে স্নান করতেন। অতীতের চিকিৎসাশাস্ত্রে লিভারের সমস্যা থেকে নাক দিয়ে রক্ত পড়া, শরীরে বিষক্রিয়া, সংক্রামক রোগের চিকিৎসা— সবক্ষেত্রেই ওষুধের অন্যতম উপাদান ছিল এই গাধার দুধ। কিন্তু এখন গাধার দুধ আর ক’জন খায় বা বলা ভালো খেতে পারে? কারণ, গোরুর দুধ যেখানে ৬৫-৭০ টাকা লিটারে বিকোয়, সেখানে গাধার দুধের দাম লিটারে ৫,০০০ টাকা! সেই গাধার দুধ বিক্রি করেই লাখপতি গুজরাটের ধীরেন সোলাঙ্কি।
শুরুটা অবশ্য সহজ ছিল না। বেসরকারি একটি চাকরি জুটিয়েছিলেন ধীরেন, কিন্তু বেতনের টাকায় সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য আসছিল না। তখন তিনি দক্ষিণ ভারতে গাধার ফার্ম সম্পর্কে জানতে পারেন। কয়েকজন দুধ ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রায় আট মাস আগে বাড়ির কাছে একটা গাধার খামার খোলেন ধীরেন। শুরুটা হয়েছিল ২০টা গাধা এবং ২২ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ দিয়ে।ধীরেনের কথায়, ‘গুজরাটে গাধার দুধের সে ভাবে চাহিদা নেই। ফলে, প্রথম পাঁচ মাস প্রায় বিক্রিই হয়নি। আমি দক্ষিণ ভারতের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওখানে গাধার দুধের চাহিদা ভালোই। এখন কর্নাটক এবং কেরালায় দুধ সাপ্লাই করি আমি। লিটারে ৫,০০০-৭,০০০ টাকা। মাসে আয় প্রায় ২-৩ লক্ষ টাকা। অতিরিক্ত দুধ শুকনো করে গুঁড়োও বিক্রি করি। সেটা কেজি প্রতি লাখ টাকা। গাধার দুধ বেশিদিন রাখা যায়, ফলে সুবিধা।’
কসমেটিক্স তৈরিতে গাধার দুধের চাহিদা ভালোই, ফলে ধীরেনের ক্লায়েন্টদের মধ্যে কসমেটিক্স সংস্থাও রয়েছে। আমেরিকার একটি গবেষণা রিপোর্ট বলছে, গাধার দুধের সঙ্গে ব্রেস্ট মিল্কের কম্পোজিশন মেলে। ফলে, যে সব বাচ্চার গোরুর দুধে অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের জন্য গাধার দুধ উন্নত বিকল্প। শুধু তাই নয়, পেটের জন্যও গাধার দুধ ভালো বলে দাবি গবেষকদের। আর তাই খামারে ৪২টা গাধা নিয়ে ব্যবসা আরও বাড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন ধীরেন।