• KKR-RCB: গেমচেঞ্জার রাসেল, খাদের কিনারা থেকে ১ রানে নাটকীয় জয় নাইটদের...
    আজকাল | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে নাটকীয় জয়। রবিবাসরীয় সন্ধেয় মাত্র ১ রানে জিতল কলকাতা নাইট রাইডার্স। খাদের কিনারে থেকে ফিরে এল শ্রেয়স আইয়াররা। ১০ পয়েন্ট নিয়ে আবার দুইয়ে উঠে এল নাইটরা। শেষ বলে লকি ফার্গুসনকে ফ্লায়িং রানআউট করে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন ফিল সল্ট। ভিলেন হওয়ার মুখ থেকে কোনওক্রমে বাঁচলেন মিচেল স্টার্ক। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২১ রান। প্রথম বলে করণ শর্মার ছয়। দ্বিতীয় বলে রান হয়নি। তারপর তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে ২৪.৭৫ কোটির বোলারকে জোড়া ছক্কা। ম্যাচ প্রায় আরসিবির হাতের মুঠোয়। ২ বলে প্রয়োজন ৩ রান। কিন্তু পঞ্চম বলে ফলো আপে দুর্দান্ত ক্যাচ স্টার্কের। শেষ বলে দরকার ছিল তিন। দু"রান নিলে সুপার ওভার হতো। কিন্তু দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন ফার্গুসন। তবে তার আগে আসল কাজ করে দেন আন্দ্রে রাসেল। শেষ দু"ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩১ রান। মাত্র ১০ রান দিয়ে দীনেশ কার্তিকের গুরুত্বপুর্ণ উইকেট তুলে নেন ড্রে রাস। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ব্যাট হাতে ২৭ রানের পর, ৩ উইকেট। স্বভাবতই ম্যাচের সেরা। প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২২২ রান তোলে কেকেআর। নির্ধারিত ওভারে ২২১ রানে অলআউট বেঙ্গালুরু। আগের ম্যাচে রাজস্থানের বিরুদ্ধে ২২৩ রান করেও হারতে হয়েছিল নাইটদের। কিন্তু এদিন বাটলার হতে পারলেন না কার্তিক। ঘরের মাঠে নাটকীয়ভাবে জয়ে ফিরল কেকেআর।

    অন্যদিকে হারের ফলে প্লে অফ থেকে কার্যত ছিটকে গেলেন কোহলিরা। এদিন আইপিএলে টিকে থাকার লড়াই ছিল। কিন্তু আট ম্যাচে সাতটি হার। পরপর হাফ ডজন হারে প্লে অফের দরজা বন্ধ আরসিবির। বেঙ্গালুরুর ইনিংসের বয়স ২.১ ওভার। হরষিত রানার একটা বুক সমান বলে মিস হিট। তালুবন্দি করলেন নাইট বোলার। শ্মশান স্তব্ধতা ইডেনে। কোনও সময় নষ্ট না করে ডিআরএস নেন বিরাট। কিন্তু রেজাল্ট বদলায়নি। বলটা মারার সময় ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসায় মনে করা হয় বলটা কোমরের নীচে ডিপ করছিল। বেনিফিট অফ ডাউট। কিন্তু যায় কোহলির বিপক্ষে। মেজাজ হারান। সটান আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। ফাফও বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বৃথা চেষ্টা। বিরক্তি প্রকাশ করতে করতে মাঠ ছাড়েন কোহলি। ডাগআউটের সামনে গিয়ে রাগে দু"বার ব্যাট মাটিতে ঠোকেন। দেওয়াল লিখন যে তখনই হয়ে গিয়েছিল। ২২৩ রান তাড়া করতে নেমে কোহলি ১৮ রানে ফিরে গেলে সেই ম্যাচ জেতা সম্ভব না। বিশেষ করে যেখানে দলের সবচেয়ে সেরা এবং ছন্দে থাকা ব্যাটার তিনি। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন উইল জ্যাকস এবং রজত পাতিদার। ৩৫ রানের মধ্যে দলের দুই সেরা ব্যাটার বিরাট এবং ডু"প্লেসি (৭) প্যাভিলিয়নে। কিন্তু আরসিবিকে চালকের আসনে বসিয়ে দেয় জ্যাকস-পাতিদার জুটি। ইডেনে ঝড় তোলেন। স্টার্ক, সুয়াশদের বেধড়ক পেটান। তৃতীয় উইকেটে ৪৮ বলে ১০২ রান যোগ করে এই জুটি। এরা ব্যাট করার সময় মনে হয়েছিল‌,‌ অনায়াসেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে বেঙ্গালুরু। কিন্তু ম্যাচের রং বদলে দেয় ক্যারিবিয়ান জুটি। বিশেষ করে আন্দ্রে রাসেল। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম এবং চতুর্থ বলে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে দেন। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ৫টি ছয়, ৪টি চারের সাহায্যে ৩২ বলে ৫৫ রান করে আউট হন জ্যাকস। আরও ভয়ঙ্কর মেজাজে ছিলেন পাতিদার। ৫টি ছয়, ৩টি চারের সাহায্যে ২৩ বলে ৫২ রানে ফেরেন। রাসেলের দোসর নারিন। পরের ওভারেই জোড়া উইকেট। ফেরান ক্যামেরুন গ্রিন (৬) এবং মহিপাল লোমরোরকে (৪)। মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট হারায় আরসিবি। এই জায়গা থেকেও দলকে লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখেন দীনেশ কার্তিক। তাঁকে কিছুটা সঙ্গ দেন সুয়াস প্রভুদেশাই। কিন্তু ২৪ রান করে আউট হন। ম্যাচের ভাগ্য নির্ভর করছিল ডিকের ওপর। কিন্তু বাটলার হতে পারলেন না কার্তিক। ১৮ বলে ২৫ রানে ফেরেন।

    প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২২২ রান তোলে নাইটরা। ফিল সল্ট এবং শ্রেয়স আইয়ারের ব্যাটে ভর করে রানের পাহাড়ে পৌঁছয় কেকেআর। চলতি আইপিএলে প্রথম অর্ধশতরান কেকেআরের নেতার। নাইটদের অধিনায়ক ফর্মে ফেরায় কিছুটা স্বস্তি পাবে কেকেআর শিবির। তবে এদিন অনেকটাই স্লো খেলেন শ্রেয়স। শুরুতে সল্ট ঝড়। তবে মাত্র ২ রানের জন্য অর্ধশতরান হাতছাড়া। ১৪ বলে ৪৮ রানে আউট হন নাইট ওপেনার। ইনিংসে ছিল ৩টি ছয়, ৭টি চার। এদিন রান পাননি সুনীল নারিন (১০)। ব্যর্থ মিডল অর্ডারও। শেষদিকে গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করেন রিঙ্কু সিং (২৪), আন্দ্রে রাসেল (২৭) এবং রমনদীপ সিং (২৪)। দুটো ছয়, চারের সাহায্যে মাত্র ৯ বলে ২৪ রান করেন শেষজন। তিন উইকেট রাসেলের। জোড়া উইকেট সুনীল নারিন এবং হরষিত রানার।
  • Link to this news (আজকাল)