• পঞ্চায়েতের অর্থে তৈরি সরবেড়িয়া মার্কেট স্বনামে করেছেন শাহজাহান
    বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকায় তৈরি সরবেড়িয়া মার্কেট নিজের নামে করেছিলেন সন্দেশখালির বাদশা শেখ শাহজাহান।  আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসেবে ক্ষমতা দেখিয়ে বাজারের দোকান ও ঘর বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু সেই টাকা পঞ্চায়েতে জমা না করে তিনি ভরেছিলেন নিজের পকেটে। তদন্তে নেমে এমনই তথ্য হাতে এসেছে ইডির। দাবি ওই কেন্দ্রীয় এজেন্সির। বিষয়টি কীভাবে পঞ্চায়েতের নজর এড়িয়ে গেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এজেন্সি।

    তদন্তে নেমে ইডি জেনেছে, সরবেড়িয়ায় আজ যেখানে শাহজাহান মার্কেট, সেখানে আগে একটি পুকুর ছিল। এই সম্পত্তি জোর করে লিখে নেন শাহজাহান। মালিকদের বলা হয়েছিল, তাঁদের এই বাজারের অংশীদার করা হবে। বাজার তৈরি করবেন বলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহজাহান মণ্ডল এবং আরও তিন-চারজনের কাছ থেকে ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা ‘ভাই’ তোলেন বলে অভিযোগ।  তাঁদের অংশীদারিত্ব দেওয়া হবে বলা হয়। ইডি জেনেছে, টাকা নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করেন দাপুটে ভাই। বিপুল পরিমাণ টাকা নিজের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন তিনি। 

    তদন্তে উঠে এসেছে, ২০১৩ থেকে এই পুকুর বোজানোর কাজ শুরু হয়। ওইসময় আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন শাহজাহান। ওই জমিতে সন্দেশখালি-১ ব্লকের জন্য পঞ্চায়েত বাজার গড়ে তুলবে বলে প্রধানকে দিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করান তিনি। সিদ্ধান্ত হয়, এজন্য যে টাকা লাগবে তার পুরোটাই দেওয়া হবে পঞ্চায়েত তহবিল থেকে। যথারীতি সরকারি টাকায় বাজার তৈরি হয়ে যায় বছর তিনেকের মধ্যে। পঞ্চায়েতের টাকায় গড়ে ওঠা সরবেড়িয়া মার্কেট পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেন সন্দেশখালির বাদশা। সেখানকার সমস্ত দোকান তিনিই বিক্রি করেন। লক্ষণীয় ব্যাপার হল, চুক্তিপত্রে শাহজাহান নিজেকে মার্কেটের ‘মালিক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। 

    ইডির তদন্তকারীদের প্রশ্ন, সরকারি টাকায় নির্মিত বাজারের মালিক শাহজাহান হয়ে গেলে কোন জাদুতে? ইডির অভিযোগ, একইসঙ্গে সেখানে আড়তে ব্যবসা করার জন্য মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হতো তা পঞ্চায়েতে জমা পড়ত না, চালান হয়ে যেত শাহজাহানের জিম্মায়। এমনকী, ছোট ছোট দোকান বসানোর জন্যও দৈনিক একশো টাকা করে তোলা হতো। ওই টাকাও ভাই আত্মসাৎ করেছেন বলে তদন্তে জেনেছে ইডি। গত আট বছরে তিনি এইভাবে কত টাকা বেআইনিভাবে তুলেছেন, এখন তারই হিসেব কষছেন ইডি আধিকারিকরা।
  • Link to this news (বর্তমান)