ধাপার মতোই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বর্জ্যের পাহাড় কমাতে একাধিক পদক্ষেপ করছে রাজ্য প্রশাসন। সরকারি সূত্রে খবর, কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) প্রমোদনগরে জমা হওয়া বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে জৈব গ্যাস, প্লাস্টিকের চেয়ার-টেবিল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গে ধাপার মতোই বায়ো মাইনিং পদ্ধতিতে গ্রিন ফিল্ড (জঞ্জালের স্তূপের উপর কৃত্রিম সবুজ ঘাস বসানো) তৈরি হবে।কেএমডিএর এক কর্তা বলেন, ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বর্জ্যের পাহাড় আমরা আর রাখতে চাইছি না। সে কারণেই প্রমোদনগরের ডাম্পিং গ্রাউন্ড ঘিরে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দূষণ যেমন ঠেকানো যাবে, তেমনই বর্জ্য ফেলার জন্য জায়গার অভাবও হবে না।’
ইএম বাইপাস সংলগ্ন ধাপাকে মূলত জঞ্জালের পাহাড় হিসেবেই সকলে জানেন। কিন্তু, গত কয়েক বছরে আমূল বদলে গিয়েছে ধাপা। ৬০ একর জায়গা জুড়ে থাকা ধাপার বড় অংশ জুড়ে বায়ো মাইনিং পদ্ধতিতে জঞ্জালের স্তূপের উপর কৃত্রিম পদ্ধতিতে বসেছে সবুজ ঘাস। যার দৌলতে এখন ধাপাকে দেখতে লাগছে বাগানের মতো।
কলকাতা পুরসভার এক কর্তা বলেন, ‘ধাপাকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলেছি। আগামী দিনে এই জায়গায় বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সে জন্যই গ্রিন ফিল্ড তৈরি করা হয়েছে।’ ধাপার মতোই প্রমোদনগরের ডাম্পিং গ্রাউন্ডেও যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়, সে জন্য সেখানে গ্রিন ফিল্ড তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কেএমডিএ সূত্রে খবর, প্রমোদনগরে প্রতিদিন জমা হওয়া বর্জ্য পৃথকীকরণের পরে তার একাংশ দিয়ে জৈব গ্যাস তৈরি হবে।
এই প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছ থেকেও সাহায্য নিচ্ছে কেএমডিএ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘প্রতিদিন ৬টি পুরসভার বর্জ্য ধাপায় ফেলা হয়। ফলে সেখানে ক্রমশ জায়গা কমছে। তাই বর্জ্য পুনরায় ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়াটা খুবই জরুরি ছিল।’
পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর মতে, ‘প্রমোদনগরের ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ই-বর্জ্য-সহ নানা ধাতব পদার্থ প্রতিদিন জমা হয়। সেগুলি পৃথক না করে পুনরায় ব্যবহারের কাজে লাগালে বিপদ বাড়বে।’ পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘এই রকমের উদ্যোগে যেমন অনেক কর্মসংস্থান হবে, তেমনই প্রমোদনগর লাগোয়া এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রাও কমবে।’