India Alliance Rally In Ranchi : রাঁচির মঞ্চে কেজরিদের নামে ফাঁকা চেয়ার রেখে সরব ইন্ডিয়া, খোঁচা মোদীর
এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়, নয়াদিল্লি: সবে প্রথম দফার ভোট হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের এখনও ছ’দফা বাকি। প্রকৃতির রুদ্ররোষের পাশাপাশি তাই ভোটের আঁচেও হাওয়া গরম রবিবারের। একদিকে রাঁচির সমাবেশ থেকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াল ‘ইন্ডিয়া’ জোট। সমাবেশে আসার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাঁচি যেতে পারেননি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।তবে তাঁর অনুপস্থিতিতে জোটের বাকি নেতারা সুর চড়ালেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জেলে মেরে ফেলার চক্রান্ত চলছে বলে প্রকাশ্য মঞ্চেই সরব হলেন অরবিন্দ-পত্নী সুনীতা কেজরিওয়াল। অন্য দিকে, কার্যত তখনই রাজস্থানের ভোটমঞ্চ থেকে নাম না-করে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীকে বিঁধলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী।
লোকসভা ভোটে তিনি যে এবার লড়বেন না, তা আগেই জানিয়েছিলেন সনিয়া। পরে কংগ্রেস তাঁকে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সাংসদ করে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সেই আবহেই মোদীর খোঁচা— ‘যাঁরা ভোটে লড়াই করে জিততে পারেন না, তাঁরাই মাঠ ছাড়েন। আর রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় যান।’
কেজরির ‘অন্যায়’ গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে দিল্লির রামলীলা ময়দানে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সমাবেশ ডেকেছিল আপ। এ দিন রাঁচির সমাবেশে ইস্যু ছিল দুর্নীতি মামলায় ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ। আয়োজক জেএমএম। মঞ্চে কেজরি-হেমন্তের নাম লেখা ফাঁকা চেয়ার নজর কাড়ে সব টিভি-ক্যামেরার। ভাষণ দিতে গিয়ে কেজরির পরেই হেমন্তের গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গ তোলেন সুনীতা৷
চাঁদিফাটা রোদে রাঁচির প্রভাত তারা ময়দানে উপস্থিত জনতার সামনে ছুড়ে দেন প্রশ্ন— ‘ওরা অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং হেমন্ত সরেনকে জেলে ভরেছে৷ দোষী সাব্যস্ত না-করেই! এটা কি ঠিক করেছে?’ উপস্থিত জনতা সমবেত স্বরে জানায়— ‘নহি’৷ এর পরেই সুনীতার সংযোজন, ‘আদালত তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করেনি৷ তারপরেও তাঁদের গ্রেপ্তার করে জেলে ভরা হয়েছে৷ এটা তানাশাহি৷ আমরা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না৷’
বাকি ছ’দফার ভোটে বিজেপিকে হারাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করা হবে—রাঁচির ময়দান থেকেও একমত হন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতারা। একইসঙ্গে বিরোধী জোটের সংকল্প, যত দ্রুত সম্ভব কেজরিওয়াল ও সরেনকে জেল থেকে বের করে আনার চেষ্টা করা হবে৷ এই মর্মেই মঞ্চে উপস্থিত সপা নেতা অখিলেশ যাদবের আবেদন, ‘মনে রাখবেন, এবার যদি বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে না-পারি, তা হলে এরা ইংরেজদের মত আমাদের শোষণ করবে, দেশের সংবিধান ধ্বংস করবে৷ বিজেপি সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার৷ এরা ভ্যাকসিন দিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করেছে৷ গণতন্ত্র বাঁচানোর জন্যই সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে৷’
এক সুর শোনা গিয়েছে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের গলাতেও৷ তাঁর দাবি, ‘বিজেপি নেতারা যতই বলুন না কেন, ৪০০ পার এবার হবে না। এবং সেটা ওরাও জানে৷ এ বার আমাদের শক্তি এতটাই মজবুত যে বিজেপি আমাদের দমাতে পারছে না, পারবেও না৷ সরেনজি, কেজরিওয়ালজিকে জেলে ভরে ওরা আমাদের ভয় দেখাচ্ছে৷ কিন্তু আমরা এতে ভয় পাচ্ছি না, কারণ জনতা আমাদের দেশের রক্ষক, গণতন্ত্রের রক্ষক৷’
তৃণমূলের তরফে এদিন রাঁচির সভায় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিবেক গুপ্তা৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে জোটের নেতাদের প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানান তিনি৷ একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ— বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী বিভাজনের রাজনীতি করছেন৷ এই বিভাজন বন্ধ করতে হবে৷ বিবেকের কথায়, বিরোধীদের ‘এক এক ভোট, বিজেপি কো চোট৷’ সভার আয়োজক জেএমএমের তরফে হেমন্ত-পত্নী কল্পনা সরেনও জোটের শরিকদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দেন৷