• আবাস, তাঁত শ্রমিকদের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সুর চড়ালেন অভিষেক
    বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: নাগরিকত্ব ইস্যু তো রয়েইছে। পাশাপাশি এবারের লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরকে টক্কর দিতে তৃণমূলের কাছে অন্যতম হাতিয়ার তাঁত শ্রমিক ও আবাস যোজনার প্রাপকদের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। রবিবার দত্তপুলিয়ায় রানাঘাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর হয়ে নির্বাচনী জনসভায় এই দুই ইস্যুতেই সুর চড়িয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

    এদিন সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রাখেন অভিষেক। চলতি বছরেই আবাসের টাকা রাজ্য সরকার মেটাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। অভিষেক বলেন, আবাস যোজনার টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। তাই এবার বাংলার বঞ্চিতদের টাকা দেবে তৃণমূল সরকার। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মুকুটমণি অধিকারীর হাত ধরে রানাঘাটের আবাস যোজনায় বঞ্চিতরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা পাবেন। নির্বাচনে জিতলে প্রত্যেক যোগ্য আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আবাসের টাকা ঢুকবে। দিদির গ্যারান্টিকে লাইফটাইম ওয়ারেন্টি বলে তকমা দেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। প্রসঙ্গত, পূর্ব প্রতিশ্রুতিমত রাজ্যের একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে কথা রেখেছে রাজ্য সরকার। অভিষেকের এদিনের প্রতিশ্রুতিতে তাই আশার আলো দেখছেন আবাস বঞ্চিতরাও। 

    তাঁত শ্রমিকদের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়েও এদিন বক্তব্য রাখেন অভিষেক। শান্তিপুর, ফুলিয়া, রানাঘাট মিলিয়ে জেলায় প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ তাঁত শিল্পীদের বসবাস রয়েছে। সুতোর উপর চড়া হারে জিএসটি বসানোয় জেলার বহু তাঁত শ্রমিককে কর্মহীন হতে হয়েছে। খরচের বোঝা বইতে না পেরে হস্তচালিত তাঁত বন্ধ করে দিতে হয়েছে অনেককে। বাধ্য হয়ে জেলার তাঁত শ্রমিকদের একটা বড় অংশ বেছে নিয়েছেন বিকল্প পেশা। কেন তাঁত শ্রমিকদের প্রতি এই বঞ্চনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, মোদি সরকার তাঁতের সুতোর উপর জিএসটি বসিয়ে মানুষের রোজগার কেড়ে নিয়েছে। গত পাঁচ বছরে তাঁত শিল্পীদের জন্য সাংসদ জগন্নাথ সরকার কী করেছেন? জগন্নাথ দাবি করেন যে, সংসদ ল্যাড এবং বিভিন্ন খাতের টাকা তাঁতশিল্পের উন্নতিতে নাকি খরচ করেছেন তিনি। তাহলে কোথায় গেল সেই টাকা? নবদ্বীপ এবং শান্তিপুরের বিধায়কদের কাছে তাঁত শিল্পীদের জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ সম্পর্কে কোনও তথ্যই নেই। 

    আসলে সবটাই ভাঁওতাবাজি। সভামঞ্চের সামনে থিকথিকে ভিড় লক্ষ্য করে অভিষেক বলেন, বিজেপির নেতারা ভোট চাইতে গেলে জগন্নাথ সরকার গত পাঁচ বছরে কী কী করেছেন, তার রিপোর্ট কার্ড চাইতে ভুলবেন না। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে জেলার তাঁত শ্রমিকদের বড় অংশ বিজেপির প্রতি রীতিমতো ক্ষুব্ধ। শান্তিপুর এবং ফুলিয়ার তাঁত মহল্লায় কান পাতলেই ‘নো ভোট টু বিজেপি’ আলোড়ন শোনা যাচ্ছে। যদিও এসব মানতে নারাজ রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। তিনি বলেন, সেন্ট্রাল স্কিমের আওতায় জেলার তাঁত শ্রমিকদের উন্নতির জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কেন্দ্র বরাবরই তাঁতশিল্পীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। বরং রাজ্য সরকারই তাঁদের জন্য আজ পর্যন্ত কিছু করেনি।
  • Link to this news (বর্তমান)