• বাঙালি ও রাজবংশী বিরোধী বিস্তা, তোপ বিজেপি নেতার
    বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • অসীম দত্ত, শিলিগুড়ি: লোকসভা ভোটগ্রহণের ঠিক আগে দার্জিলিং কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দলেরই দু’বারের প্রাক্তন জেলা সভাপতি নৃপেন দাস। নৃপেনবাবুর সরাসরি অভিযোগ, ‘দার্জিলিংয়ের বিজেপি প্রার্থী বহিরাগত। তিনি প্রথম থেকেই প্রবলভাবে বাঙালি ও রাজবংশী বিরোধী। দলের এই প্রার্থী জাতপাতের রাজনীতি করার পাশাপাশি পাহাড়ের মানুষকেও পাঁচ বছর ধরে ঠকিয়ে আসছেন। তাঁদের সঙ্গে মিথ্যাচার করেছেন। পাহাড়ের মানুষের সমস্যা সমাধান না করে তা কৌশলে জিইয়ে রেখেছেন। যাতে ফের পাহাড়ের মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন উতরে যেতে পারেন।’ বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির প্রাক্তন ওই সভাপতির আরও অভিযোগ, ২০১৯ সালে বিস্তা দার্জিলিংয়ের সাংসদ হওয়ার পর থেকে বাঙালি ও রাজবংশী ভাষাভাষির মানুষের জন্য একটি শব্দও খরচ করেননি। এঁদের জন্য উন্নয়নমূলক কোনও প্রকল্প হাতে নেননি। এমনকী উনি অন্যান্য ভাষায় কথা বললেও গত পাঁচ বছরে বাংলা কিংবা রাজবংশী ভাষায় কোনও বক্তব্য রাখেননি। 

    দলের দু’বারের প্রাক্তন জেলা সভাপতির এমন মন্তব্যের পর বিজেপির ভিতরে-বাইরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এমনিতেই ভোট ঘোষণার শুরু থেকে দলে অন্তর্কলহ চলছে। তাছাড়া প্রচারে বেরিয়ে প্রার্থী ঘনঘন বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ায় দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব বিব্রত। তার উপর নৃপেনবাবু প্রার্থীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি নেতৃত্ব। প্রাক্তন জেলা সভাপতি বলেছেন, ‘বিস্তা আসার পর থেকেই তিনি বিজেপির সমস্ত পুরনো কর্মীকে ছাঁটাই করে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। সেখানে সিপিএমের থেকে লোক ধরে এনে জেলা সভাপতি, বিধায়ক, জেলার নেতা তৈরি করছেন।’ এই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানতে রাজু বিস্তাকে একাধিকবার ফোন এবং মেসেজ করা হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি। রাজ্য বিজেপির সহ কোষাধ্যক্ষ প্রবীণ আগরওয়াল বলেন, ‘নৃপেনবাবু অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছেন। এসবের কোনও সারবত্তা নেই। রাজু বিস্তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ নির্বাচনের ফলেই মিলবে।’ 

    নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগেই অবশ্য দার্জিলিং জেলায় প্রার্থীর নাম নিয়ে দলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এসে গিয়েছিল। দলের কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ঘোষণা করে দেন, বহিরাগত কোনও প্রার্থীকে ফের টিকিট দেওয়া হলে তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে দলের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। বিস্তা প্রার্থী হওয়ায় তিনি নির্দল হিসেবে সেফ্টিপিন প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার পাশাপাশি দলের অন্যান্য পুরনো কর্মীদের বিক্ষোভের চোরাস্রোত সামাল দেওয়াও এখন বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জ।
  • Link to this news (বর্তমান)