• তীব্র দাবদাহে গলে যাচ্ছে বহুমূল্য রাবার পেন্ট
    বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি,বরানগর: দক্ষিণেশ্বরে ভবতারিণী মন্দির দর্শন করতে সারা বছরই উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড়। তবে তীব্র দাবদাহের কারণে মন্দিরে আসা ভক্তদের সংখ্যা বর্তমানে কমেছে। আগুনের মতো তেতে ওঠা মন্দির চাতালে পা রাখতেই ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা মানুষের। প্রতিদিনই মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছেন অনেকে। কারও মাথা ফাটছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ চাতালে দাঁড়ানোর সুবিধার জন্য ভক্তদের দাঁড়ানোর লাইন বরাবর রাবার পেন্ট করেছে। কিন্তু গরমের চোটে দু’দিন যেতে না যেতেই সে পেন্ট গলছে। উঠেও যাচ্ছে।

    দক্ষিণেশ্বর ভবতারিণী মন্দির রামকৃষ্ণের সাধনভূমি। প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ আসেন। বিশেষ কিছু দিনে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। করোনা পরিস্থিতিতে তা কমেছিল। তারপর ভিড় স্বাভাবিক হয়েছে। যদিও এখন তীব্র তাপপ্রবাহ ভক্তসংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। দিনে মেরেকেটে পাঁচ থেকে সাত হাজার ভক্ত আসছেন বর্তমানে।  গত দেড় সপ্তাহ সকাল ন’টা বাজতে না বাজতেই মন্দিরের চাতাল আগুনের মতো গরম হয়ে উঠছে। বারবার জল ঢেলেও কিছু লাভ হচ্ছে না। মুহূর্তের মধ্যে জল শুষে পুনরায় গরম হয়ে যাচ্ছে চাতাল। জল সাময়িক আরাম দেওয়ার পর ফের গরম চাতালে পা পড়তেই পায়ে ফোস্কা। শুক্রবার মন্দিরে পুজো দিতে হাবড়া থেকে এসেছিলেন শর্মিলা ঘোষ নামে এক মহিলা। তীব্র গরম সহ্য করতে না পেরে মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। মাথার ডান দিক ফেটে যায়। অটোয় করে তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দক্ষিণেশ্বর পুলিস ফাঁড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ জনের মতো ভক্ত মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছেন। রবিবার এক তরুণী একইভাবে পড়ে গিয়েছিলেন। অসুস্থদের পাখার বাতাস করা হচ্ছে। জল ও ওআরএস খাইয়ে সুস্থ করার চেষ্টাও হচ্ছে।

    রবিবার হাওড়া থেকে এসেছিলেন সুহৃদ ঘোষ। বিহার থেকে এসেছিলেন প্রেমশঙ্কর সাউ। তাঁরা বলেন, ‘মন্দিরে ঢোকার পর মনে হচ্ছিল পুড়ে যাব। খালি পায়ে চাতালে পা ফেললে ছ্যাঁকা লাগছে। কোনওমতে পুজো দিয়ে দৌড়ে নাটমন্দিরে ঢুকে বেঁচে গিয়েছি।’ গৃহবধূ শুভ্রা দত্ত বলেন, ‘হয় ভোরে নয় সন্ধ্যায় এলে ভালো হতো। বেলায় এসে দেখছি পায়ে ফোস্কা পড়ে গিয়েছে। মাথার উপর একটা আচ্ছাদনের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।’ মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে কুশল চক্রবর্তী বলেন, ‘এত বড় মন্দির চত্বরে কীভাবে আচ্ছাদন দেওয়া সম্ভব?’ এর পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব নয়। ভক্তদের কষ্টের কথা ভেবে চাতালে দামি রাবার পেন্ট দেওয়া হয়েছিল। তার উপর দিয়ে হাঁটলে গরম সে ভাবে অনুভব হয় না। সেটিও গরমে গলে যাচ্ছে। জল দেওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে ফের গরম হয়ে যাচ্ছে মেঝে। তার মধ্যেও মন্দিরের কর্মীরা সমস্তরকম প্রয়াস নিচ্ছেন। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)