• Alipore Zoo : গরমে দই, তরমুজ, ওআরএস-এ পরিচর্যা চিড়িয়াখানার বাসিন্দাদের
    এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: ভরদুপুরে লোকজনের সংখ্যা এমনিতেই কম। তাই ছুটির মেজাজেই রয়েছে ওরা। এনক্লোজ়ারে এয়ার কুলার বসে যাওয়ায় তীব্র গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানার বাসিন্দারা। ঠান্ডা হাওয়ার সামনে বসে কেউ মনের সুখে শসা চিবোচ্ছে, কারও পাতে পড়েছে দই অথবা তরমুজ।জলশূন্যতা আটকাতে পশুপাখিদের পানীয় জলে নিয়ম করে ওআরএস-ও মেশানো হচ্ছে। ঠান্ডা জলে যাতে ওরা তেষ্টা মেটাতে পারে, তার জন্য এনক্লোজ়ারের জলে রেখে দেওয়া হচ্ছে বরফের স্ল্যাব। কৃত্রিম জলাশয়ে শরীর ডুবিয়ে অনেকক্ষণ বসে থাকার পর সেখান থেকে বেরিয়েই ঠান্ডা জল খেয়ে শরীর জুড়োচ্ছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ও সিংহরা।

    গরম থেকে বাঁচতে কী করা উচিত, সে বিষয়ে বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই সংবাদমাধ্যমে নানা পরামর্শ দেওয়া শুরু করেছেন ডাক্তারবাবুরা। তবে শহরে তো মানুষ ছাড়া ‘ওরা’-ও আছে। ওরা অর্থাৎ আলিপুর চিড়িয়াখানার না-মানুষ অতিথিরা। গরমের তীব্রতা বাড়তেই ওদের সুস্থ রাখার পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা।

    প্রতি বছরেই গরম পড়লে এখানকার জন্তুদের ডায়েটে বদল আনা হয়। ওদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাখায় রেখে নানা রকমের ব্যবস্থা করা হয়। তবে, এ বছরের গরমটা অন্য বারের মতো নয়। শুক্রবার কলকাতার তাপমাত্রা মরশুমে প্রথমবারের জন্য ৪০ ডিগ্রির ঘর পার করলেও তার কয়েক দিন আগে থেকেই পরিস্থিতি অত্যন্ত কষ্টকর ও অস্বস্তিজনক হয়ে পড়েছিল।

    ফলে পশুদের জন্য আলাদা করে কেয়ার নেওয়া শুরু হয় চিড়িয়াখানায়। এই প্রসঙ্গে আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলছেন, ‘সব রকমের জন্তু তো এক প্রকৃতির হয় না, তাই আমরা প্রকৃতিভেদে আলাদা আলাদা ব্যবস্থা করেছি। কিছু ব্যবস্থা এমন করা হয়েছে, যেগুলো বেশির ভাগ পশুই পাচ্ছে। যেমন প্রত্যেকের পানীয় জলেই ওআরএস মেশানো হচ্ছে। তৃণভোজী ও মাংসাশী—দু’রকমের পশুদেরই সামার ডায়েট-চার্ট তৈরি হয়েছে।’

    চিড়িয়াখানার কর্মীরা জানাচ্ছেন, পশুপাখিদের এনক্লোজ়ারে স্প্রিঙ্কলার বসানো হয়েছে। জলের ফোয়ারায় এনক্লোজ়ারগুলো যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখতেই এই ব্যবস্থা। এছাড়া ভালুক ও ক্যাঙারু এবং অন্য আরও কিছু জন্তুর খাঁচায় এয়ার কুলারও বসানো হয়েছে। তৃণভোজী পশুদের খাবারে বেশি করে শসা ও তরমুজের মতো রসালো ফল দেওয়া হচ্ছে।

    বাবু, ছোটু, রানি ও মস্তান—চিড়িয়াখানার শিম্পাঞ্জিকে শরীর ঠান্ডা করতে দেওয়া হচ্ছে দই। চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বলছেন, ‘যে এনক্লোজ়ারগুলোয় সারা দিনই বিভিন্ন দিক থেকে রোদ পড়ে, সেখানে বিশেষ রকমের নেট টাঙিয়ে রোদের তেজ কম রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’

    প্রতিটা এনক্লোজ়ারই সিসিটিভির নজরদারিতে রয়েছে। কোনও জন্তুর আচরণে অস্বাভাবিকত্ব দেখা যাচ্ছে কি না, ২৪ ঘণ্টাই সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলেও খবর চিড়িয়াখানা সূত্রে।
  • Link to this news (এই সময়)