• Divorce Temple: এই মন্দিরে গেলেই বিবাহ বিচ্ছেদ! কোথায় আছে এই ডিভোর্স টেম্পল?
    এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • মাতসুগাওকা টোকেজি মন্দির জাপানেরকামাকুরা শহরে অবস্থিত একটি ৬০০ বছরের পুরনো বৌদ্ধ মন্দির। মন্দিরটি এমন সময় থেকে শুরু হয় যখন সেইযুগের মহিলাদের তাদের স্বামীদের ছেড়ে যাওয়ার কোনও আইনি অধিকার ছিল না। সেইযুগে এমন একটি সময় ছিল যখন জাপান বিবাহবিচ্ছেদের ধারণার সাথে পরিচিত ছিল না। এই মন্দিরের দরজাখুলে দেওয়া হয় সেই সব স্বামীদের দ্বারা নিপীড়িত, অত্যাচারিত মহিলাদের জন্য।১২৮৫ সালে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কাকুসান শিদ-নি কামাকুরা শহরে মাতসুগাওকা টোকেজি মন্দিরটির নির্মাণ করেন। ১১৮৫ থেকে ১৩৩৩ সালের মধ্যে জাপানের মহিলাদের আইনি অধিকার পাওয়ার সুযোগ খুব সীমিত ছিল। সেইসঙ্গে ছিলবেষ কয়েকটি সামাজিক বিধিনিষেধও। অসুখী বিবাহে বসবাসকারী মহিলারা তাদের স্বামীদের হাত নির্যাতনের শিকার হয়ে মন্দিরটির ভিতরে আশ্রয় নিত। পরে এই মন্দির আত্যাচারিত মহিলাদের নিশ্চিন্ত ও নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিল এবং তাদের দ্বিতীয় বাড়িতে পরিণত হয়েছিল।

    মাতসুগাওকা টোকেজি মন্দিরটি দ্য ডিভোর্স টেম্পল নামেও পরিচিত। এখানে যে সব মহিলারা আশ্রয় নিয়েছিল তারা প্রত্যেকেই নিজেদের বৈবাহিক জীবন থেকে মুক্তি চেয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেএই বৌদ্ধ মন্দিরটি নিজেদের জীবন সঙ্গীদের চিরতরে ছেড়ে যেতে ইচ্ছুক মহিলাদের আনুষ্ঠানিক বিবাহবিচ্ছেদের শংসাপত্র প্রদানের জন্য একটি অপারেশন পরিচালনা শুরু করে।

    এই ধরণের ডিভোর্স সার্টিফিকেট সুইফুকু-জি নামে পরিচিত ছিল। এই শংসাপত্রটি ওইসব নির্যাতিত মহিলাদের তাদের স্বামীদের কাছ থেকে আইনি বিচ্ছেদ পেতে সাহায্য করত।

    পরে এই মন্দিরকে কাকেকোমি-ডেরা বা সম্পর্ক ছিন্ন করার মন্দির নামে ডাকা হত।

    তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে মন্দিরের নিয়ম কানুন। বর্তমানে বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত আইনি সমস্যায় মন্দির কোনও হস্তক্ষেপ করে না। তবে এখনও সবাই এই মন্দিরটিকে আগেকার দিনেরমহিলাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় বলে মনে করেন।

    মাতসুগাওকা টোকেজি মন্দিরটি খুব সুন্দর বাগান দ্বারা বেষ্টিত এবং আকর্ষণীয় স্থাপত্যের এক অনন্য নজির। আজও এই মন্দির নারীর ক্ষমতায়ন এবং স্বাধীনতার একটি উল্লেখযোগ্য প্রতীক হিসেবে দঁড়িয়ে আছে।

    এই মন্দিরটি কাকুসান-নি নামে এক সন্ন্যাসী তার স্বামী হোজো তোকিমুনের স্মরণে তৈরি করেছিলেন। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে সুখী ছিলেন না এবং তার বিবাহবিচ্ছেদের সুযোগও ছিল না। সেইযুগে মহিলারা কোনও কারণ ছাড়াই তাদের বিয়ে ভেঙে দিতে পারতেন। এর জন্যতাদের মাত্র সাড়ে তিন লাইনের একটি নোটিস লিখতে হত। প্রায় তিন বছর এই মন্দিরে থাকার পর মহিলারা তদের স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পরত। পরে তা কমিয়ে দুবছর করা হয়।
  • Link to this news (এই সময়)