সোমবার ধর্ষণের শিকার ১৪ বছরের নাবালিকার ৩০ সপ্তাহের গর্ভাবস্থার অবিলম্বে চিকিৎসা বন্ধ করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বম্বে হাইকোর্টের রায়কে কার্যত উড়িয়ে নাবালিকার পক্ষেই রায় দিল দেশের শীর্ষ আদালত।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি অ্যাক্টের বিধানের অধীনে, ২৪ সপ্তাহের গর্ভকালীন সময়ের বাইরে গর্ভধারণ বন্ধ করতে গেলে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন।
সেইমতো ২৮ সপ্তাহের গর্ভধারণ বন্ধ করার অনুমতি চেয়ে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানায় নাবালিকার পরিবার। তবে বম্বে হাইকোর্ট নাবালিকাকে তার গর্ভধারণ বন্ধ করার অনুমতি দিতে অস্বীকার করে। বম্বে হাইকোর্ট বলে যে, নাবালিকার গর্ভাবস্থা একটি উন্নত পর্যায়ে রয়েছে এবং এটি বন্ধ করার ফলে একটি সম্পূর্ণ বিকশিত ভ্রুণের হত্যা করা হবে। বম্বে হাইকোর্টে অনুমতির আবেদন খারিজ হওয়ার পর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন নাবালিকার মা।
সোমবার সেই আবেদনেরই শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়ই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ গর্ভাবস্থার চিকিৎসা বন্ধ করার জন্য একটিদল গঠন করার জন্য সাইন হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছে।
বেঞ্চ জানিয়েছে যে হাসপাতাল নিশ্চিত করবে নাবালিকাটিকে নিরাপদে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এবং গোটা প্রক্রিয়াটির জন্য মহারাষ্ট্র সরকার যাবতীয় খরচ বহন করতে রাজি হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ সিজেআই চন্দ্রচূড়ের আগের দিনের জন্য উঠেছিল, ইমেলের মাধ্যমে জরুরি উল্লেখ করার পরে, তালিকাভুক্ত এবং বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বিষয়টির শুনানি চলে।
সুপ্রিম কোর্ট সরকারি আইনজীবীকে নাবালিকা ও তার মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করতে বলে। বলা হয় নাবালিকার যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মেডিক্যাল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে যে নাবালিকা মেয়েটির জীবনের কোনও রকম ঝুঁকি ছাড়াই গর্ভনির্ধারণ বন্ধ করা যায় কিনা বলে আগের দিনের শুনানিতে সাফ জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালকে ২২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। সেই মামলারই শুনানি ছিল সোমবার। এই মামলায় সরকারের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বরিয়া ভাটি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বম্বে হাইকোর্ট গত ৪ এপ্রিল নাবালিকার মায়ের করা আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের যান ওই নাবালিকার মা।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালার সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চকে নাবালিকার মা জানিয়েছিলেন যে, তাঁর মেয়েকে পরীক্ষা না করেই ডাক্তারি মতামত তৈরি করা হয়েছিল। তারপরই যাবতীয় শারীরিক পরীক্ষার পর আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।