প্যানেলে বাতিলে একমাত্র টিকে তাঁর উইকেট, তবুও খুশি নন! মুখ খুললেন সোমা
এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৪
SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমা দাস, যিনি প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সুপারিশে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁকে কাজে বহাল রাখা হয়েছে। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরও ‘সম্পূর্ণ খুশি’ নন সোমা? তিনি ‘এই সময় ডিজিটাল’-কে ফোনে বলেন, ‘যাঁরা আমার সঙ্গে আন্দোলন করছিলেন, সেই সহযোদ্ধারা এখনও নিজের অধিকার পাননি।’ঠিক কী বলেছেন সোমা?
তিনি বলেন, ‘আমি যখন মঞ্চে গিয়েছিলাম তখন কোনও ক্যানসার আক্রান্ত রোগী হিসেবে যাইনি। পরিস্থিতির কারণে সেই সময় মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে বিচার করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশকে প্রাধান্য দিয়ে আমার চাকরিটা বহাল রাখা হয়েছে। তবে এতে যে আমি সম্পূর্ণ খুশি তা নয়।’
তাঁর সংযোজন, ‘আমি সকলের সঙ্গে আন্দোলন করেই নিজের চাকরিটা নিতে চেয়েছিলাম। দুর্নীতি প্রমাণিত হলেও আমাদের সহযোদ্ধারা এখনও নিজের অধিকার পায়নি। যেদিন তাঁরা নিজেদের অধিকার পাবে আমি সেই দিনই খুশি হব।’
পাশাপাশি যাঁদের চাকরি গিয়েছে তাঁদের নিয়েও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সোমা। তাঁর কথায়, ‘এটা তাঁদের নৈতিক অধঃপতননের পরণতি। সৎ পথে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি তাঁরা পেতে চাননি। বরং নেতা-মন্ত্রীদের ধরে টাকা দিয়ে চাকরি পেতে চেয়েছিলেন। আর সেই কারণেই আজকের এই দিনের মুখোমুখি হতে হয়েছে।’
২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের (এসএলএসটি) পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ ছিল, মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও চাকরি দেওয়া হয়নি তাঁকে। এরপর রোদ-বৃষ্টি মাথায় করে অসুস্থ সোমা ধরনা, অবস্থান বিক্ষোভ করেছিলেন।
২০২২ সালে ১৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সোমাকে শিক্ষকতার বদলে অন্য চাকরি করার প্রস্তাব দিলেও তিনি তা ফিরিয়ে দেন। এরপর আদালতের সুপারিশে চাকরি পেয়েছিলেন সোমা।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নলহাটির এক নম্বর ব্লকের মধুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত তিনি। পাইকপাড়া অঞ্চলের আশ্রমপাড়ায় তাঁর বাড়ি। ক্যানসার আক্রান্ত সোমা লড়াইয়ের ময়দান ছাড়েননি। এরপর তাঁর চাকরির বিষয়টি সুপারিশ করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, গত বছর ডিসেম্বর মাসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন তাঁর বাড়ির সামনে হাজির হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। সেই সময় সোমা দাসকে চাকরি দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'সোমা দাসকে চাকরির ব্যবস্থা আমি করিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন।'