মাঠে পুড়ছে ফসল! একটা কালবৈশাখী অন্তত হোক, চাইছেন চাষিরা
এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়, কালনা: এই সময়ে পর পর কয়েকটা কালবৈশাখী হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়েছে মাত্র একটি। তীব্র গরমে প্রাণান্তকর দশা। জলের অভাবে ফুটিফাটা চাষজমি। প্রচণ্ড তাপ ও জলের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে সব্জির গাছ। কমছে ফলন। চড়ছে সব্জির দর। ক্ষতি এড়াতে রাত জেগে জমিতে জল ঢালছেন পূর্বস্থলীর চাষিরা।পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা, সরডাঙা, ধিতপুর, হৃষি, ফলেয়া, সিমলে, কালেখাঁতলার মতো এলাকাগুলোয় প্রচুর সব্জিচাষ হয়। কালেখাঁতলা আর পারুলিয়ায় রয়েছে সব্জির দু’টি বড় পাইকারি বাজার। সেখান থেকে সব্জি চালান যায় কলকাতা সমেত রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে। কিন্তু, সেই পাইকারি বাজার ঝিমোচ্ছে। সব্জির জোগান প্রায় নেই বললেই চলে।
পরিস্থিতি এতটা ঘোরালো হওয়ার পিছনে কালবৈশাখীর আকালকেই দায়ী করছেন সকলে। পুকুর-খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে নেমে গিয়েছে জলস্তরও। হৃষিতে গভীর নলকূপেও উঠছে না জল। এলাকার সব্জিচাষি বলরাম দাস বলেন, ‘এখন মাঠে রয়েছে পটল, বরবটি, ঝিঙে, করলার মতো সব্জি। আমাদের এখানে গ্রীষ্মকালীন ফুলকপি ও বাঁধাকপিরও চাষ হয়। তবে জলের সমস্যা মারাত্মক। কালবৈশাখীতে যে বৃষ্টির জল পাওয়া যায়, সেটাও মেলেনি। ফলে মাঠের সব্জি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
তিনি জানাচ্ছেন, মাটিতে টান এত বেশি যে, দিনে যেখানে এক ঘণ্টা জল দিতে হতো, সেখানে এখন তিন ঘণ্টাতেও কাজ হচ্ছে না। সেই জলও সহজে মিলছে না। তার উপর জলস্তর নেমে যাওয়ায় দিনে জল উঠছে না। রাতে দু’একটি শ্যালো মেশিনে জল উঠছে। বলেন, ‘সব্জি বাঁচাতে এখন আমাদের রাত জেগে জমিতে জল দিতে হচ্ছে।’
আর এক চাষি বিজয় দাস বলেন, ‘এই ঝলসানো তাপে কি আর ফলন হয়? ফলন প্রচুর কমে গিয়েছে।’ ফলেয়াতেও রয়েছে সব্জির আড়ত। তার আড়তদার রাজিম শেখ বলেন, ‘ফলন কমে যাওয়ায় দর চড়ছে সব্জির। খুচরো বাজারে পটলের দর ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৩০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা ও বাঁধাকপি ২৫ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে।’
কালনার মহকুমা কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। ফলনও কমে যায়। নিয়মিত জল দিতে হবে। পর্যাপ্ত কালবৈশাখী না হওয়ায় জলের এমন সঙ্কট। এবার এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি কালবৈশাখী পাওয়া গিয়েছে।’