বিজেপি জিতলে কালীঘাট-তারাপীঠে বন্ধ হবে আমিষ ভোগ! মোদির বক্তব্য তুলে ধরে প্রচারে তৃণমূল
প্রতিদিন | ২২ এপ্রিল ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার: বিজেপি জিতলে কালীঘাট (Kalighat) মন্দিরে মায়ের ভোগে মাছ-মাংস বন্ধ হবে! বন্ধ হয়ে যেতে পারে তারাপীঠ মন্দিরের ভোগের আমিষের পদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একাধিক জনসভার বক্তব্য তুলে ধরে এমনই জোরদার প্রচার শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির অযোধ্যার রামমন্দির তৈরির ইস্যুর পালটা প্রচারে বাঙালির আবেগ সতীপীঠ কালীঘাট মন্দিরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্কাইওয়াক ও সংস্কার ছাড়াও চূড়াটি সোনা দিয়ে মোড়াকেও ভোটারদের কাছে তুলে ধরছে জোড়াফুল শিবির।
কলকাতা দক্ষিণের প্রার্থী মালা রায়ের সমর্থনে একাধিক কর্মিসভায় জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক দেবাশিস কুমার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ‘নিরামিষ খেতে হবে’ বক্তব্য তুলে ধরে সাধারণ মানুষের কাছে কালীঘাট মন্দিরের ভোগের বিষয়কে হাতিয়ার করছেন। ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দাস আয়োজিত যোধপুর গার্ডেনে শনিবার রাতে এমনই এক কর্মিসভায় দেবাশিস ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নানা জনসভায় বলছেন, ?বৈশাখ মাসে কেন মাছ-মাংস খাওয়া হবে? ধর্মের নিয়ম মেনে সবাইকে নিরামিষ খেতে হবে।? তাই যদি হয়, তবে আমরা সবাই তো মা কালীর ভক্ত। কালীঘাট মন্দিরে মায়ের ভোগে মাছ-মাংস দেওয়া হয়। তারাপীঠেও একইপদে মাকে ভোগ দেন ভক্তরা। তা হলে কি প্রধানমন্ত্রীর নিদান মেনে মায়ের ভোগে মাছ-মাংস বন্ধ করে দেওয়া হবে?’’ এর পরই জেলা তৃণমূল সভাপতির সতর্কবার্তা, ?বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে শুধু আপনার আমার খাবার-পোশাক কী হবে তাই ঠিক করবে না, কালীঘাট-তারাপীঠ মন্দিরে মায়ের ভোগও বদলে দেবে।?
তৃণমূল সূত্রে খবর, বীরভূম ও বর্ধমানেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তারাপীঠ মন্দিরের ভোগেও মাছ-মাংস বিজেপি বন্ধ করে দেবে বলে প্রচার শুরু করেছে জোড়াফুল শিবির। দুই জেলায় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্ধ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিংহ থেকে শুরু করে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথরা প্রতিটি সভায় বিজেপি মাছ-মাংস খাওয়া বন্ধের যে টার্গেট নিয়েছে তা তুলে ধরছেন। কলকাতা দক্ষিণের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে রাজ্য সরকার ও প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলররা যে বিপুল উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন সেটাকেই প্রচারের হাতিয়ার করছেন তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়। অবশ্য দেবাশিস কুমারের পরে ভাষণ দিতে উঠে বিধায়কের কালীঘাট মন্দিরের ভোগ নিয়ে বক্তব্য সমর্থন করেন মালা। বলেন, ‘‘এটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নয়, ইতিমধ্যেই বিজেপি ক্ষমতায় এসে একাধিক রাজ্যে মাছ-মাংস বিক্রি কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে। গৈরিকীকরণের নামে গোটা দেশটাকেই গুজরাত বানাতে চাইছে বিজেপি। বাংলায় মা কালী-মা তারার ভক্তরা নিশ্চয়ই এর জবাব দেবেন।’’
বিশাল এই কর্মিসভায় বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ও বিজেপির এজেন্সি নির্ভর রাজনীতি নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। গত সোয়া দুবছরে ওয়ার্ডে উন্নয়নের খতিয়ান তা তুলে ধরে বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করতেই মানুষের কাছ থেকে তৃণমূলের সমর্থনে যে বিপুল সাড়া মিলছে তা তুলে ধরেন কাউন্সিলর মৌসুমী দাস। ছিলেন বরো চেয়ারপার্সন চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন মেয়র পারিষদ রতন দে, যুব তৃণমূল সভাপতি অনুপ দাস প্রমুখ।