তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ ইডির হাতে বন্দি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরিবন্দ কেজরিওয়ালের। তাঁর দাবি, একাধিকবার জেল কর্তৃপক্ষকে ইনসুলিন নেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলেন তিনি। তবে বর্তমানে তিহাড় জেলের তরফে তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থার যে হাল তুলে ধরা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন কেজরিওয়াল। এই নিয়ে তিহাড় জেল সুপারকে চিঠি লিখেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল লিখেছে, 'আমি সংবাদপত্রে তিহার প্রশাসনের বিবৃতি পড়েছি। বিবৃতিটি পড়ে আমি দুঃখিত। তিহাড়ের উভয় বক্তব্যই মিথ্যা। আমি প্রতিদিন ইনসুলিন চেয়েছি। দিনে তিনবার করে যখনই গ্লুকোজ মিটার রিডিং দেখেছি তখনই উচ্চ মাত্রার শর্করার লেভেল ধরা পড়েছে। যতবারই মেপেছি ততবারই রক্তে শর্করার মাত্রা ২৫০ থেকে ৩২০-এর মধ্য়ে ধরা পড়েছে। AIIMS-এর চিকিৎসকরা কখনই বলেননি যে চিন্তার কিছু নেই। AIIMS-এর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন কেস হিস্ট্রি দেখে জানাবেন তাঁরা। রাজনৈতিক চাপে পড়েছে তিহাড় প্রশাসন।' উল্লেখ্য, তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, কেজরির শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক নয়। তাঁর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই ইনসুলিন বন্ধ করা হয়েছে, চলছে শুধু ওরাল মেডিসিন।টাইপ-২ ডায়াবেটিক রোগী হওয়া সত্ত্বেও কেজরিওয়ালকে তিহাড়ে ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছিলেন আম আদমি পার্টির নেত্রী অতিশি। এনিয়ে শনিবার জেল কর্তৃকপক্ষকে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিকে সাক্সেনাকে। সেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গ্রেফতারির মাসখানেই আগে থেকেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইনসুলিন নেওয়া বন্ধ করেছিলেন। বদলে তিনি নিচ্ছিলেন অ্যান্টি-ডায়াবেটিস ওরাল মেডিসিন। এবার তিহাড় কর্তৃপক্ষের সেই দাবিকেই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন কেজরিওয়াল।
তিহাড় কর্তৃপক্ষ রিপোর্টে জানায়, তিহাড় জেলে স্বাস্থ্য পরীশ্রার সময় কেজরিওয়াল চিকিৎসকদের জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইনসুলিন নিলেও কয়েক মাস আগে থেকে তা বন্ধ করে দিয়েছেন। সম্প্রতি কেজরিওয়ালের সুগার-বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। রবিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী দল আম আদমি পার্টি (আপ) দাবি করেছে, কেজরিওয়ালের সুগারের লেভেল অর্থাৎ রক্তে শর্করার পরিমাণ ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। রবিবারই দিল্লির তিহাড় জেলের সামনে হাতে ইনসুলিন নিয়ে আপের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে সামিল হন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে আপ (AAP) নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, 'জেলের ভিতরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ডাক্তারদের তরফে বারবার বলা হচ্ছে কেজরিওয়ালকে ইনসুলিন দেওয়ার জন্য। জেল প্রশাসন তা দিতে অস্বীকার করায় মুখ্যমন্ত্রীকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।' এই অভিযোগ আনার পরের দিনই তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষের একটি চিঠি প্রকাশ্যে আনে আপ নেতৃত্ব।