'টাকা ফেরত দিতে হবে না', স্ত্রী চাকরি খোয়ালেও 'খাঁড়ার ঘা' এড়াতে পেরে স্বস্তিতে অনামিকার স্বামী
এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৪
SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাকরি যায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেই চাকরি বাতিল করা হয়। এরপর অঙ্কিতার চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। কিন্তু, সেই চাকরিও টেকেনি বেশিদিন। আদালতের নির্দেশে সেই চাকরিটি পান অনামিকা রায়। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় দেয়। গোটা প্যানেলই বাতিল করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ফলে বাতিল হয়েছে অনামিকা রায়ের চাকরিও।কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ শোনার পর ঠিক কী প্রতিক্রিয়া অনামিকার? স্বাভাবিকভাবেই ভেঙে পড়েছেন তিনি। অনামিকার কথায়, 'অনেক লড়াই করে চাকরিটা পেয়েছিলাম। অযোগ্যদের জন্য আবার পরীক্ষা দিতে হবে। তা ভেবেই হতাশ লাগছে।'
অনামিকার স্বামী এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, 'আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে নির্দেশ মোতাবেক ওকে বেতন ফেরত দিতে হবে না।’ এদিন অনামিকা বলেন, 'কে যোগ্য, কে অযোগ্য তা আদালত প্রমাণ করতে পারল না। অযোগ্যদের জন্য যোগ্যদের এর আগেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এই রকম রায় হবে ভাবতে পারিনি। সকাল থেকেই ভাবছিলাম যে কোনওমতেই যাতে যোগ্যদের সমস্যায় পড়তে না হয়। এই রায়ের পর মনে হচ্ছে বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রাখা ভুল ছিল? যোগ্যদের কথা ভাবা হল না। যোগ্যদের গুরুত্ব থাকল না। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছি।'
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে SSC। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চাকরি যাঁদের গিয়েছে, তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় ২৬ হাজার মানুষ মানে পরিবার নিয়ে সংখ্যাটা লাখের কাছাকাছি। কেউ থাকুক বা না থাকুক আমি আছি। শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। কেউ হতাশ হয়ে পড়বেন না।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আশ্বাসবাণীকে কার্যত কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন অনামিকার মতো যাঁদের চাকরি গিয়েছে। এদিকে ইতিমধ্যেই এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। BJP নেতারা সরব হয়েছেন, বিঁধছেন রাজ্য সরকারকে।
নিয়োগের ক্ষেত্রে দেদার দুর্নীতি এই রায়ে প্রমাণিত, এমনটাই দাবি করেছেন BJP নেতারা। সরব হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা অধুনা BJP নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। তিনি সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন। সবমিলিয়ে ভোট বাজারে এই রায় নিয়ে বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছে।