মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতীর একটি পুরনো ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ভাইরাল। ভিডিয়োতে উমা ভারতীকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিষয়ে বলতে গিয়ে, তাঁকে 'বিনাশ পুরুষ' বলে আখ্যা দিতে দেখা যাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের আবহে ইউজাররা সেই পুরনো ভিডিয়োটিই আবার শেয়ার করতে শুরু করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে ভিডিয়োটি পোস্ট করে সন্তোষ কুমার যাদব নামে এক এক ইউজার লিখেছেন, 'ভাজপা কি পূর্ব মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতী নে তো মোদী কা লাল বহী খাতা হি খোল দিয়া!' ভিডিয়োটি নজরে আসার পরেই সেটির ফ্যাক্ট চেক করে সংবাদমাধ্যম বুম। আর তারপরেই উঠে আসে আসল সত্য।কী রয়েছে ভিডিয়োতে?দুই মিনিটের ওই ভিডিয়োতে, উমা ভারতী বলেছেন, 'যখন সাধু ও নারীদের হত্যা করা হচ্ছে, ধর্ষকরা রাস্তায় অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তখন নরেন্দ্র মোদীজি তাঁর এজেন্ডা হিসেবে হিন্দুত্ব ও উন্নয়নের এজেন্ডাকে চিত্রিত করতে চেয়েছিলেন… আমি বিশ্বাস করি যে নরেন্দ্র মোদীজি 'উন্নয়ন মানুষ' নন, তিনি 'বিনাশ পুরুষ'। গুজরাতকে তাঁরা ধ্বংস করেছেন।' ভিডিওর বাকি অংশে, নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর গুজরাত উন্নয়ন মডেলকে তিরস্কার করতে শোনা গিয়েছে ভারতীকে।
ভাইরাল ভিডিয়োর স্ক্রিনশট
কী ভাবে জানা গেল আসল বিষয়?বুম দেখে যে ভিডিয়োটি ভাইরাস হয়েছে সেটি প্রায় ১৩ বছরের পুরানো এবং সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সেটির কোনও সম্পর্ক নেই। ভাইরাল ভিডিয়োটির সত্যতা জানতে, বুম উমা ভারতীর মোদী 'বিনাশ পুরুষ' বক্তব্যের সঙ্গে সম্পর্কিত কী ওয়ার্ডগুলিতে গুগলে সার্চ করে। সেই সার্চের মাধ্যমে ২০১৪ সালের বেশকিছু রিপোর্ট উঠে আসে বুমের হাতে। ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল তারিখে একটি সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়ো প্রতিবেদনে ওই ভিডিয়োটি দেখা যাবে। ওই রিপোর্ট অনুসারে, কংগ্রেস ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় উমা ভারতীর এই পুরানো ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিল।
১৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখের আরও একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে, কংগ্রেস দ্বারা প্রকাশিত এই বিষয়ে সিডির উল্লেখ করার সময়, বলা হয় যে উমা ভারতী প্রধানমন্ত্রী মোদীর গুজরাট মডেলের দাবিকে 'ভন্ডামি' বলে অভিহিত করেছিলেন এবং তাকে 'বিনাশ পরুষ' বলে অভিহিত করেছিলেন। আবার ২০১৪ সালের আরও একটি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে কংগ্রেস এই ভিডিওটি প্রকাশ করার পরে, উমা ভারতীও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে সেই সময় তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির অংশ ছিলেন না।
শুধু তাই নয়, ভিডিয়োটি এর আগে ২০১৯ সালে একইরকম বিভ্রান্তিকর দাবি নিয়ে ভাইরাল হয়েছিল এবং BOOM তখনও সেটির ফ্যাক্ট চেক করেছিল। আর এর থেকেই বুম বুঝতে পারে যে ভিডিয়োটি পুরনো এবং তা নতুন করে ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
(This story was originally published by BOOM and translated and edited by Ei Samay Digital as part of the Shakti Collective)