প্লাস্টিক মুক্তির পথে কলকাতা' বাজারে-বাজারে বসছে ভেন্ডিং মেশিন!
২৪ ঘন্টা | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
অয়ন ঘোষাল: বিশ্বে প্রতি বছর মোট ৪০০ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ২৫০ মিলিয়ন টন সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক। যা গড়ে মাত্র ১১ মিনিটের জন্য ব্যবহার করেন বিশ্ববাসী। তারপর ফেলে দেন। আর এই ১১ মিনিট ব্যবহারের পর সেই সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক পৃথিবীর বুকে থেকে যায় বছরের পর বছর। এটি মাটির সঙ্গে মেশে না। এর মধ্যে এরকম প্লাস্টিক আছে যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় মাইক্রো প্লাস্টিক বলে। যাকে চোখে দেখা যায়না। যা বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মতো ভেসে বেড়ায়। এবং নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় আমাদের নাকের মধ্যে দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে এবং বছরের পর বছর থেকে যায়।
ভারতে একজন মানুষ বছরে গড়ে এরকম প্রায় ২৫০ গ্রাম প্লাস্টিক নিজের অজান্তেই শরীরের মধ্যে ধারণ করেন। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে মোট উৎপাদিত সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের পরিমাণ দাঁড়াবে ১১০০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। (তথ্য সূত্র ইউনাইটেড নেশন এনভায়রনমেন্ট রিসার্চ) ভারতে এই মুহূর্তে দৈনিক মোট ২৬ হাজার মেট্রিক টন সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে রিসাইকেল করা যায় মাত্র ৮ শতাংশ। ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদন সম্পূর্ন বন্ধ করতে চায় সরকার। পাশাপাশি সরাসরি উৎপাদক দের রুজি রুটিতে আঘাত না করে তারা রিসাইকেল অর্থাৎ ১২০ মাইক্রনের বেশি মাত্রার প্লাস্টিক উৎপাদনে জোর দিতে চায়। পাশাপাশি মিশন লাইফ নামে একটি সচেতনতা ড্রাইভ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। যেটি স্বচ্ছ ভারত মিশনের অন্তর্গত। কলকাতার একাধিক বাজারে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে বেশ কিছু ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে। যে মেশিনে সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ জমা দিলে বিনিময়ে রিসাইকেল ক্যারি ব্যাগ পাওয়া যাবে। পশ্চিমবঙ্গে ধাপার মাঠের মতো বড় ডাম্পিং গ্রাউন্ড ১০৫ টি। এখানে যে সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক বর্জ্য জমা পড়ে তার ৩০ শতাংশ প্যাকেজিং এর প্লাস্টিক। এগুলিকে বায়ো মাইনিং নামে একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উচ্চ তাপমাত্রায় গলিয়ে ফেলা যায়। সেখান থেকে উৎপাদিত রিসাইকেল প্লাস্টিক রাস্তা তৈরির কাজে লাগে। কিন্তু এটি করতে ১১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুল্লি প্রয়োজন। যা শুধুমাত্র সিমেন্ট প্রোসেসিং প্ল্যান্ট গুলিতে থাকে। পশ্চিমবঙ্গে সেরকম কোনো প্রোসেসিং প্ল্যান্ট নেই। পাশের রাজ্য ওড়িশা থেকে তা করিয়ে আনতে হয়। এতে অনেক সময় ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রির অবস্থা হয়।