• বাজারের চা চক্র থেকে নেপাল সীমান্ত, দিনভর ছোটাছুটি দার্জিলিংয়ের কংগ্রেস প্রার্থী মুণীশের
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • অসীম দত্ত, শিলিগুড়ি: সকাল সাড়ে ৬টা। পূবের সূর্যের গায়ে তখনও হাল্কা লাল আভা। শিলিগুড়ির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের রেগুলেটেড মার্কেটে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন ছোটবড় ব্যবসায়ীরা। বাজারের ভিতর চা, বিস্কুট, খিচুড়ির দোকানে জটলা। সোমবার সেখানে আচমকাই হাজির দার্জিলিং লোকসভা আসনের সিপিএম ও হামরো পার্টি সমর্থিত ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস প্রার্থী মুণীশ তামাং। সাতসকালে প্রচারে এসেছেন খয়েরি কুর্তা, কালোপ্যান্ট পরে। গলায় তেরঙ্গা উত্তরীও। প্রার্থীর সঙ্গে হাজির জোট সঙ্গীরাও। দলবল নিয়ে আড্ডায় অংশ নিলেন প্রার্থী। তাঁকে দেখে ব্যবসায়ীরা প্রথমে কিছুটা অবাক হলেও পরে মজে যান গল্পে। বাজারের চা চক্রের আসরে এভাবেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচয়পর্ব সেরে নেন প্রার্থী। আসর ছেড়ে বেরোনোর আগে প্রার্থী মুণীশ চা-বিস্কুটের দাম দিতে গেলেও তা নিতে চাননি দোকানদার। ব্যবসায়ীদের অনুরোধ, স্যর টাকা দেবেন না। আপনি এসেছেন, আমাদের কর্তব্য করতে দিন। সকলের সঙ্গে হাত মিলিয়েই বাজারে প্রবেশ করেন প্রার্থী। 

    স্থায়ী ব্যবসায়ীদের অনুরোধে সেখানেই দফায় দফায় চলে চা চক্রের আসর। আড্ডায় তখন জমজমাট রেগুলেটড মার্কেটের সকাল। এরই মাঝে রাজনৈতিক আলোচনা। দলের প্রচারপর্ব সেরে নেন জোটের কংগ্রেস প্রার্থী। কয়েক দফায় চা পান করে ফুরফুরে মেজাজে মুণীশ। প্রার্থীর সঙ্গে হাজির ছিলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক, লক্ষণ ঘোষ, হরেন্দ্রর রাইয়ের মতো নেতারাও। বাজারের হাল দেখে প্রার্থী বলেন, এখানে ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের খতম করে সিন্ডিকেট রাজ গড়ে তোলা হয়েছে। আম্বানি- আদানিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে সেই সিন্ডিকেটের রাশ। 

    বাজারে প্রচার শেষে মুণীশ রওনা হন পতন ফুলবাড়ি চা বাগানে। বাগানের বিভিন্ন অলিগলিতে বিজেপি ও তৃণমূলের পাশাপাশি উড়তে দেখা গেল কংগ্রেস ও বামেদের পতাকাও। প্রার্থীকে স্বাগত জানাতে হাজির দু’দলের কর্মী সমর্থকরা। শ্যামল ওরাওঁ, দীনেশ লাকড়ার মতো শ্রমিকরা চা বাগানের পরিস্থিতি মুণীশকে জানান। দীর্ঘক্ষণ চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রার্থী। আশ্বস্ত করেন বাগানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার। 

    শহরঘেঁষা এলাকার পর তাঁর গন্তব্য নেপাল সীমান্ত। ছ’টি সাদা বিলাসবহুল গাড়ি সোজা পানিট্যাঙ্কির পথ ধরল। বাগডোগরার যানজট পেরিয়ে সেই কনভয় সাড়ে ১২টায় পৌঁছল পানিট্যাঙ্কিতে। আগে থেকেই সেখানে হাজির দু’দলের কর্মীরা। তিনটি টোটোতে মাইক লাগিয়ে চলল প্রচার। সিপিএম পার্টি অফিস থেকে দু’দলের নেতা কর্মীদের নিয়ে শুরু হল পানিট্যাঙ্কি বাজারে প্রচার। কেউ প্রার্থীকে দেখে হাত জোড় করলেন, কেউ বাজারে ব্যাগ রেখে মুণীশকে জড়িয়ে ধরলেন। একসময়ের লালদুর্গ হিসেবে পরিচিত বাজারে বামদের পতাকাই বেশি নজরে এল। নেপাল সীমান্তে প্রচার সেরে প্রার্থী ও অন্যান্য সকলেই রওনা দেন বাতাসি ও খড়িবাড়ির উদ্দেশে। 
  • Link to this news (বর্তমান)