অভিষেক পাল, বহরমপুর: বহরমপুর টেক্সটাইল কলেজ মোড় থেকে জেলাশাসকের অফিসের দূরত্ব মেরে কেটে ৫০০ মিটার। এদিন বেলা বাড়তেই ওই রাস্তায় শুধুই ছিল কালো মাথার ভিড়। বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের মনোনয়ন ঘিরে গোটা রাস্তা চলে গেল তৃণমূল কর্মীদের দখলে। কার্যত জনজোয়ারের রূপ নিল মনোনয়ন দাখিলের মিছিল। টেক্সটাইল কলেজ মোড়ের তৃণমূলের জেলা কংগ্রেস কার্যালয় থেকে যখন মিছিল বের হয় তখনও বেশ কয়েকটি মিছিল ওই কলেজ মোড়ে পৌঁছতে পারেনি। পাঠান যখন জেলাশাসকের অফিসে পা রাখলেন, তখনও টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে মিছিলের শেষ ভাগ। পাঁচ হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের উচ্ছ্বাসে ভেসে হেঁটে মনোনয়ন জমা দিলেন বহরমপুরের তারকা প্রার্থী। কর্মীদের সঙ্গে ছিল বিশাল আকারের পতাকা, জোড়া ফুল প্রতীকের কাটআউট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও ইউসুফ পাঠানের বিশাল একটি কাটআউট নিয়ে জনস্রোত এগিয়ে চলে। ব্যান্ড পার্টি সঙ্গে নিয়ে নাচতে নাচতে জেলাশাসকের অফিসের দিকে এগতে থাকেন প্রচুর কর্মী-সমর্থক। মহিলারা এদিন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ঘট নিয়ে মিছিলে হাঁটেন। প্রখর রোদ ও গরম উপেক্ষা করে পাঠানকে নিয়ে মানুষের উন্মাদনার বাঁধ ভাঙে।
জেলাশাসকের অফিসের ১০০ মিটার অবধি ১৪৪ ধারা জারি করা থাকলেও মানুষের উন্মাদনায় তা ভেঙে যায়। জেলাশাসক অফিসের দুটি গেট দিয়েই কাতারে কাতারে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা হাতে প্ল্যাকার্ড, তৃণমূলের পতাকা নিয়ে ঢুকে পড়েন। পরে অবশ্য পুলিস তাঁদের বের করে দেয়। পাঠানের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহের খান, বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার, চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা সহ বিধায়ক ও অন্যান্য নেতৃত্ব। বিপুল মানুষের জনসমর্থন নিয়ে এদিন মনোনয়ন জমা দিতে যান জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার। মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরোনোর পর পাঠানের গলায় আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে।
পাঠান বলেন, মানুষের এই উন্মাদনা আমার জয়ের পথ সুনিশ্চিত করছে। শুধু উন্নয়ন দিয়েই ভোট হবে। এখানকার এত বছরের সাংসদ এতদিনে যা যা করতে পারেননি, আমি সাংসদ হয়েই সেই কাজগুলি আগে করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু মানুষের উন্নয়ন চান। সকলে যাতে ভালোভাবে বাঁচতে পারেন, সেদিকেই তাঁরা সবসময় চিন্তা করেন। আমিও বহরমপুরবাসীকে বলব উন্নয়ন দেখে ভোট দিন। আজ মনোনয়ন জমা দিয়ে আমার খুবই ভালো লাগছে। সবথেকে ভালো লাগছে, এত মানুষের উৎসাহ উন্মাদনা দেখে।
আবু তাহের বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেখে মানুষ ভোট দেবেন। সবুজ সাথী, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী দেখে মানুষ ভোট দেবেন। উন্নয়নের নিরিখে ভোট হবে। কোনও অপপ্রচার ও কুৎসা করে কেউ লাভ ওঠাতে পারবে না। তিনটি আসনেই আমাদের জয় হবে।
জেলা সভাপতি বলেন, মানুষের এই উন্মাদনা বুঝিয়ে দিচ্ছে ইউসুফ পাঠানের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন নিয়ে ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা লড়াই করছি। নজিরবিহীন ফলাফল হবে এই জেলার তিনটি লোকসভায়।