• চাকরি যাওয়া প্রত্যেকের পাশে আছি, শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব, বললেন মমতা
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ইসলামপুর ও নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে সোমবার চাকুলিয়ায় প্রকাশ্য জনসভা থেকে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এরা বলে বোমা ফাটবে! কী বোমা? ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে যাবে। আমরাও লড়ে যাব। যাঁদের চাকরি যাওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাঁরা হতাশ হবেন না, কেউ জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। আপনাদের পাশে আছি। যতদূর লড়াই করার আমরা করব। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, আরও ১০ লক্ষ চাকরি তৈরি রয়েছে।

    এদিন নাম না করে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেও তুলোধোনা করেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, একজনকে দেখলেন না বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে গেল। তাঁরই অর্ডার ছিল এটা। সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল নতুন ডিভিশন কোর্ট করে আলোচনা হোক। কিন্তু, কাকে নিয়ে করবেন নতুন ডিভিশন বেঞ্চ! বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। আমি বিচারক নিয়ে বলছি না। রায় নিয়ে আমি বলতে পারি। টোটাল রায়টাকে চ্যালেঞ্জ করছি। তার কারণ ২৬ হাজার ছেলেমেয়ে মানে পরিবারের দেড় দু’লক্ষ সদস্য। ওঁরা আট বছর চাকরি করেছেন। রায়ে বলেছে, ৪ সপ্তাহের মধ্যে সব টাকা ফেরত দিতে হবে। আপনারা যাঁরা এই রায় দিচ্ছেন, তাঁরা টাকা ফেরত দিতে পারতেন! এই অর্ডারটা বেআইনি। সেজন্যেই চ্যালেঞ্জ করছি। আমরা এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি। 

    মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা বিজেপির বিচারালয়। বিচারপতিদের দোষ নয়, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের দোষ। বিজেপি লোক দেখে দেখে এখানে বসিয়েছেন। বিজেপি পার্টি অফিস থেকে যেটা বলে দেয়, সেটাই ড্রাফট করে দেয়। আদালতের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাঁকে জেলে পাঠালে তিনি তৈরি বলেও জানান মমতা। বলেন, আমায় সাজা দেবেন? আমি তৈরি। মানুষের কথা বলার জন্য আমার যদি শাস্তি হয়, মাথা পেতে নেব। কিন্তু কোনও পরিবার যদি বিপদে পড়ে, তার পাশ থেকে আমি সরে দাঁড়াব না। 

    প্রতিক্রিয়ায় সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রায়ের ফলে প্রায় ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি চলে গেল। কিন্তু, প্রশ্ন হল, যাঁদের চাকরি গেল, তাঁরা কি সকলেই পাপী? নির্বাচনে এই রায়ের ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি। ডিওয়াইএফআই তরফে প্রেস বিবৃতিতেও রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা হয়েছে। 

    শিক্ষকদের চাকরি প্রার্থী মঞ্চের নেতা মহম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, আমাদের অভিযোগ যে সঠিক ছিল, তা আদালতে প্রামাণিত। একই বক্তব্য গ্রুপ সি ও ডি চাকরি প্রার্থী মঞ্চের নেতা শান্তনু শীলেরও। এছাড়াও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক সংগঠন বিজিটিএ-র নেতা সৌরেন ভট্টাচার্যের দাবি, এসএসসির অসহযোগিতার ফলেই এমন রায় দিতে বাধ্য হয়েছে আদালত।  

    তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই রায় নিয়ে বিচারপতিদের ‘অদক্ষ’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, আমাকে অনেক শিক্ষক ফোন করেছিলেন। তাঁদের সুপ্রিম কোর্টে যেতে বলেছি। 
  • Link to this news (বর্তমান)