Kolkata Metro : লোকালের অসুখ পাতালে, জঞ্জাল গর্বের মেট্রোতেও!
এই সময় | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
ছিঃ ছিঃ এত্তা জঞ্জাল...। এক সময়ে কলকাতার নামের পাশে এই ট্যাগলাইনটি জুড়ে দিতেন অনেকে। তবে অপরিচ্ছন্নতার সেই রোগ থেকে মুক্ত ছিল মেট্রো। পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার জন্যে মেট্রো নিয়ে গর্ব করতেন সবাই। কিন্তু সেই সুনাম আর কতদিন ধরে রাখা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।নিত্যযাত্রীরা অভিযোগ করছেন, গত কয়েক মাসে মেট্রোয় পরিচ্ছন্নতা একেবারে শিকেয় উঠেছে। লোকাল ট্রেনের মতো মেট্রোর স্টেশনগুলিতে অনেকে আবর্জনা ফেলে চলে যাচ্ছেন। স্টেশন চত্বরে কিংবা কামরায় কোল্ড ড্রিঙ্কস, জলের বোতল, গ্লাস, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। দেওয়ালে পানের পিক।
বিদ্যুৎ পরিবাহী উচ্চক্ষমতার থার্ড লাইনেও লোকে আবর্জনা ফেলছেন। এ নিয়ে চিন্তায় মেট্রো কর্তৃপক্ষও। বিশেষ করে মেট্রোর লাইনে যাত্রীরা যে ভাবে নোংরা ফেলছেন, তাতে থার্ড লাইনে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে বড়সড় বিপদও ঘটতে পারে।
মেট্রোর এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘কলকাতা মেট্রোয় যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁরা বরাবরই সচেতন। তাঁরা কোনও দিনই স্টেশন নোংরা করতেন না। আবর্জনা কিংবা থুতু ফেললে ৫০০ টাকা জরিমানার সংস্থান আছে। কিন্তু যেহেতু কেউ এতদিন নোংরা ফেলতেন না, তাই জরিমানা নেওয়ারও প্রয়োজন পড়ত না। এখন যেটা ঘটছে, সেটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। এ ভাবে চলতে থাকলে আগের মতো মেট্রোর পরিচ্ছন্নতা রক্ষা খুব মুশকিল।’
মেট্রোর আধিকারিকরা মনে করছেন, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো লাইনের সঙ্গে কলকাতা মেট্রো জুড়ে যাওয়ার পর থেকেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে হাওড়া থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রো (গ্রিন লাইন) চালু হওয়ার পর থেকে কলকাতা মেট্রোয় ভিড় বেড়েছে। হাওড়া স্টেশন হয়ে যাঁরা নিয়মিত লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করেন তাঁদের অনেকেই যাতায়াতের সুবিধার্থে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ধরে সোজা ধর্মতলায় আসছেন।
সেখান থেকে মেট্রোয় শহরের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছচ্ছেন। এঁদের অনেকেরই মেট্রো চড়ার অভ্যাস নেই। মেট্রোর আদব-কায়দা সম্পর্কে ঠিকমতো অবহিত নন। সেই জন্যেই লোকালের অসুখ ছড়িয়ে পড়ছে পাতালে। যাত্রীদের একাংশ অবশ্য অভিযোগ করছেন, ধর্মতলা-সহ বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে ফুড স্টল তৈরি হয়েছে। সেখানে কোল্ড ড্রিঙ্কস, জলের বোতল দেদার বিক্রি হচ্ছে।
ওই সব স্টল থেকে কোল্ড ড্রিঙ্কসের বোতল কিনে অনেকে ট্রেন ধরতে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ প্ল্যাটফর্মে বসেই ঠান্ডা পানীয় খাচ্ছেন। তার পর খালি বোতলটা ফেলে চলে যাচ্ছেন। তাই মেট্রোও দায় এড়াতে পারে না। মেট্রোর নিত্যযাত্রী কলকাতা পুরসভার কর্মী সুজিত হালদার বলেন, ‘রোজগার বাড়াতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ স্টেশনের ভিতরে ফুডস্টল করতে দিয়েছেন। তার ফল তো ভুগতেই হবে!’ অনেকে বলছেন, পরিচ্ছন্নতা নিয়ে মেট্রো নিয়মিত ঘোষণা করতে পারে, সেটাও করা হচ্ছে না।